রাজনীতির বর্ণময় অধ্যায়ের সমাপ্তি

সোমবার সকালে প্রথমে তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় কাঁকুড়গাছির বাসভবনে, পরে গোয়াবাগানের বাড়িতে। সর্বত্রই অগুনতি অনুরাগী তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানান।

Must read

প্রতিবেদন : শোকে, শ্রদ্ধায়, গান স্যালুটে রাজ্যের মন্ত্রী, মানিকতলার বিধায়ক সাধন পাণ্ডেকে বিদায় জানাল তাঁর প্রিয় শহর কলকাতা। সোমবার নিমতলা মহাশ্মশানে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্যসম্পন্ন হল বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের। সহকর্মী-সহযোদ্ধা অগ্রজের অন্ত্যেষ্টির তত্ত্বাবধান করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নজর রাখলেন প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয়ে। যেমন প্রয়াত নেতার স্ত্রী সুপ্তি, কন্যা শ্রেয়াকে আগলে রাখলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন-নারীসুরক্ষা শিকেয় আঁধারে উন্নাও

মূহ্যমান শ্রেয়াকে প্রগাঢ় মমতায় জড়িয়ে নিলেন তিনি। হাত বাড়ালেন ভরসার। রাজনীতির ময়দানে তিনি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। নির্বাচনী লড়াইয়ে তিনি ছিলেন অপরাজেয়। কিন্তু তাঁর লড়াই থামিয়ে দিল ফুসফুসের আগ্রাসী সংক্রমণ আর করোনার জোড়া ফলা। দীর্ঘ যুদ্ধের পর রবিবারই ৭২ বছর বয়সে মৃত্যুর কাছে হার মানেন তিনি। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে তিনি প্রয়াত হন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১। দুঃসংবাদ পৌঁছতেই তাঁর শেষকৃত্যের যথাযথ ব্যবস্থায় তৎপর হন মুখ্যমন্ত্রী। মরদেহ রবিবার রাতেই মুম্বই থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। তপসিয়ার পিস ওয়র্ল্ডে রাতে দেহ রাখা হয়।

আরও পড়ুন-৫ বছরের জেল লালুর, পশুখাদ্য মামলায় রায়

সোমবার সকালে প্রথমে তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় কাঁকুড়গাছির বাসভবনে, পরে গোয়াবাগানের বাড়িতে। সর্বত্রই অগুনতি অনুরাগী তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানান। দুপুরে প্রয়াত মন্ত্রীর দেহ আনা হয় বিধানসভা ভবনে। সেখানে শুধু দলীয় বৃত্ত নয়, শ্রদ্ধা জানান বিরোধীরাও। বিধানসভায় উপস্থিত হয়েছিলেন হলদিয়ার বিজেপি বিধায়ক তাপসী মণ্ডল, খানাকুলের বিজেপি বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ প্রমুখ। হাজির হন চিত্রাভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তও। সাধন পাণ্ডের মরদেহে মাল্যদান করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন তাঁরা। বিধানসভা থেকেই তাঁর শেষ কনভয় চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনউ ধরে পৌঁছয় নিমতলায়।

আরও পড়ুন-ভারতের পাশে

বাংলার রাজনীতির বর্ণময় চরিত্রের বিদায়বেলায় সমাজমাধ্যমে একটি মরমিবার্তা দিয়েছেন অভিষেক। লিখেছেন, ‘বাংলার রাজনীতির ইতিহাসে অন্যতম উজ্জ্বলনক্ষত্র ছিলেন সাধন পাণ্ডে। যখনই যে কাজের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে অর্পিত হয়েছে, তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে তা পালন করেছেন। তাঁর দেহাবসান হলেও, আমাদের হৃদয়ে তাঁর চিরস্থায়ী অধিষ্ঠান। আজ নিমতলা মহাশ্মশানে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্যসম্পন্ন হল। তাঁর শোকসন্তপ্ত আত্মীয়-পরিজন ও অনুগামীদের গভীর সমবেদনা জানাই। তাঁর প্রয়াণে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, তা কোনওদিনই পূরণ হওয়ার নয়। তাঁর আদর্শ ও উপদেশ আগামীদিনেও আমাদের পথ দেখাবে। তাঁর বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।’

Latest article