প্রতিবেদন : অনাস্থা ভোটে হার বুঝেই নিজেকে ‘শহিদ’ প্রতিপন্ন করে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টায় নামলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan)৷ যদিও তাঁর এই কৌশলকে অপচেষ্টা বলে মন্তব্য করছেন সে দেশের বিরোধী নেতারা৷ তাঁদের বক্তব্য, অনাস্থা ভোটে হার নিশ্চিত জেনেও শেষ মুহূর্তে কুর্সি বাঁচানোর চেষ্টায় রবিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করার কথা বলেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী৷
আরও পড়ুন: সঙ্কটে শ্রীলঙ্কা, বন্ধ গণপরিবহণ
কথায় বলে ভাঙবে তবু মচকাবে না। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অবস্থাও তেমনই। সাধারণ পাটিগণিতের হিসেবে ইমরান খান সরকার ইতিমধ্যেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে। কারণ সরকারের দুই জোট শরিক ইতিমধ্যেই ইমরানের পাশ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। শুধু সরে দাঁড়ানোই নয়, তারা যোগ দিয়েছে বিরোধীদের সঙ্গে। এই পরিস্থিতিতেও সম্মানজনকভাবে পদত্যাগ করা তো দূরের কথা, বরং দর কষাকষির রাস্তা খোলা রেখে বিরোধী শিবিরের সঙ্গে লড়াই জারি রাখলেন ইমরান। বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন পাক প্রধানমন্ত্রী। বলেন, পাকিস্তান রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। আমি দীর্ঘ ২২ বছর ধরে রাজনৈতিক ময়দানে লড়াই করেছি। লাভের আশায় রাজনীতিতে আসিনি। নতুন পাকিস্তান গড়ার লক্ষ্য নিয়েই আমি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলাম। আমরা স্বাধীন পাকিস্তানের প্রথম প্রজন্ম। নিজে কখনও কোনও চাপের কাছে মাথা নিচু করিনি, দেশকেও করতে দেব না। এই মুহূর্তে দেশ এক ভয়ঙ্কর বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
ইমরান আরও বলেন, ৯/১১ হামলায় পাকিস্তানের কেউই জড়িত নয়। বরং আমেরিকার জন্য আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। আমেরিকার জন্য ৮০ হাজার পাকিস্তানির মৃত্যু হয়েছে। তারপরেও বলতে পারি, যুদ্ধ লড়াইয়ের প্রয়োজন নেই পাকিস্তানের। ইমরানের দাবি, তিনি বরাবরই ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করে গিয়েছেন। তবে কিছু বিদেশি শক্তি পাকিস্তানকে হুমকি দিচ্ছে। আমেরিকাকে এদেশের বিরোধীরা ভয় পাচ্ছে। সেকারণেই তারা আমাকে সরানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। তবে আমিও শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করে যাব। পদত্যাগ করার প্রশ্নই ওঠে না। আস্থা ভোটই পাকিস্তানের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।
আরও পড়ুন: ডিপো না বাড়িয়ে কেন্দ্র বাড়াচ্ছে দাম
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের (Imran Khan) বিরুদ্ধে বৃহত্তর বিরোধী জোটের আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক ছাড়াই পাক সংসদের অধিবেশন মুলতুবি হয়ে গেল৷ সরকারের প্রস্তাব মেনে ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি রবিবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবির কথা ঘোষণা করেন৷ সেদিনই পাক সংসদের নিম্নকক্ষে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হবে৷ নির্ধারণ হবে ইমরান খানের ভাগ্য৷ তিনদিনের বিরতির পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুরু হয়েছিল সংসদের অধিবেশন৷ সরকারপক্ষ অধিবেশন মুলতুবির কথা বললেও আপত্তি ওঠে বিরোধীদের তরফে৷ যদিও ডেপুটি স্পিকার বিরোধীদের আর্জি খারিজ করে সরকারি প্রস্তাব মেনে নেন৷ এদিন রাতেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে ইমরান খান ঘোষণা করেন, পদত্যাগ নয়, তিনি অনাস্থা ভোটের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবেন৷