প্রতিবেদন : পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন শাহবাজ শরিফ। আস্থাভোটে পরাজয়ের পর সোমবার দলীয় সাংসদদের পদত্যাগের নির্দেশ দেন ইমরান খান। স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটাভুটির প্রয়োজনই হয়নি। নয়া প্রধানমন্ত্রী শাহবাজকে শপথ বাক্য পাঠ করান পাকিস্তানের উপরাষ্ট্রপতি। কারণ শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি। শপথ অনুষ্ঠান বয়কট করেন ইমরান ও তাঁর দলের সদস্যরা। শাহবাজ শরিফ (Shahbaz Sharif) প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর সংসদের মধ্যেই উল্লাসে ফেটে পড়েন দলীয় সাংসদরা। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নওয়াজ কন্যা মরিয়ম। শপথ শেষ হতেই কাকা শাহবাজের কাছে ছুটে গিয়ে তাঁর গলা জড়িয়ে ধরেন। ইমরান খানের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করতে এই পর্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কন্যা মরিয়ম।
সোমবার দুপুরে সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার পরেই দলীয় সাংসদদের ইস্তফা দিতে নির্দেশ দেন ইমরান। তিনি নিজেও সাংসদ পদ ছাড়েন। ইমরান বলেন, তিনি দাগী সাংসদদের সঙ্গে একাসনে বসবেন না। দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী শাহ মহম্মদ কুরেশির নাম সুপারিশ করেছিল ইমরানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ। কিন্তু এদিন ইমরানের দলের সাংসদরা পদত্যাগ করায় ভোটাভুটির আর প্রয়োজন হয়নি। কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাকিস্তানের ২৩ তম প্রধানমন্ত্রী হলেন শাহবাজ শরিফ (Shahbaz Sharif)। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার আগে এদিন আর্থিক দুর্নীতির মামলায় সাময়িক স্বস্তি পেয়েছেন শাহবাজ। সোমবার পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজের প্রেসিডেন্ট শাহবাজের বিরুদ্ধে চলা মামলাটি আপাতত মুলতুবি রেখেছে পাকিস্তানের বিশেষ আদালত। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন শাহবাজের বিরুদ্ধে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাগুলির জোর গতিতে তদন্ত চলছিল।
এদিকে এরইমধ্যে নতুন সরকারে পাকিস্তান পিপলস পার্টি যোগ দেবে কি না তা নিয়ে দলের অন্দরেই মতান্তর দেখা দিয়েছে। জানা গিয়েছে, পিপিপির একাংশ সরকারে যোগ দিতে চাইছেন। আর কিছু সাংসদ চাইছেন, বাইরে থেকে সরকারকে সমর্থন করতে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে দলের চেয়ারম্যান বিলাবল ভুটো জারদারি ও প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি দলের সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। তবে দলের বেশির ভাগ সাংসদ মনে করছেন, দেশে রাজনৈতিক স্থিরতা আনতে এবং মন্ত্রিসভাকে শক্তিশালী করতে সরকারে থাকা প্রয়োজন।
ইমরান খানের দেশ ছাড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক, এই আবেদন জানিয়ে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল একটি মামলা। কিন্তু আদালত এদিন ওই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। তবে ইমরানের ছয় সহযোগীর বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি এই নির্দেশিকা জারি করেছে। অন্যদিকে ইমরানের সর্মথকরা এদিন দেশজুড়ে পথে নামেন। বিক্ষোভ দেখে উৎসাহিত ইমরানও।