প্রতিবেদন : সামাজিক অবক্ষয় রুখতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিল তৃণমূল কংগ্রেস। বুধবার অস্থায়ী তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, সাম্প্রতিক কালে যে ধরনের ঘটনা ঘটছে তা অনভিপ্রেত। বিশেষ করে হাঁসখালির মতো ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এই ধরনের ঘটনা সার্বিকভাবে সামাজিক অবক্ষয়ের দিকটিই আরও বেশি করে সামনে আসছে। দলমত নির্বিশেষে সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে এই অবক্ষয় রুখতে পদক্ষেপ করা দরকার। লক্ষ্য করে দেখা গেছে, মহিলাদের যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশই ঘটে চেনা পরিসরে। কিন্তু একইসঙ্গে মনে রাখা দরকার, সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন আছে।
আরও পড়ুন-সংশোধনাগার সংস্কারে চিঠি
হাঁসখালির ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই-তদন্তকে স্বাগত জানালেও সিবিআইয়ের কার্যকলাপ ও নিরপেক্ষতা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কটাক্ষের সুরে সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, এই ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশ তদন্ত করছিল, এর মধ্যেই সিবিআই দায়িত্ব পেয়েছে। আশা করি যত দ্রুত সম্ভব তারা সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা সামনে আনবে। যদিও অতীতে অন্যান্য রাজ্য তো বটেই এই বাংলাতেও একাধিক ঘটনায় সিবিআই তদন্ত করছে কিন্তু সেগুলির কোনও সুরাহা আজ পর্যন্ত হয়নি। জ্ঞানেশ্বরী-কাণ্ড হোক কিংবা নেতাই গণহত্যার মতো কেস সিবিআইয়ের আওতায় রয়েছে। আজ পর্যন্ত এই কেসগুলির কোনও সুরাহা হয়নি। এমনকী নেতাই গণহত্যা মামলায় এত বছরে মাত্র ২৬ জনের বয়ান নথিবদ্ধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-নববর্ষের নবরবিকিরণে
এদিন বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ। সুখেন্দুশেখর রায়ের প্রশ্ন, বাংলার ঘটনা নিয়ে বিরোধীরা হইচই করছে। বিশেষ করে বিজেপি একটু বেশিই করছে, তারা হাথরাস, উন্নাওয়ের মতো ঘটনা কি ভুলে গিয়েছে? হাথরাসে পুলিশ তো অভিযোগই নেয়নি। পুলিশই জোর করে দেহ পুড়িয়েছে। পরিবারের লোকেদেরও রেয়াত করা হয়নি৷ তখন কোথায় ছিল সিবিআই? তৃণমূল সাংসদের আরও অভিযোগ, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আওতাধীন সিবিআই। সাম্প্রতিককালের ঘটনাবলি প্রমাণ করেছে, বিজেপি ও কেন্দ্রের অঙ্গুলিহেলনে চলে এই ধরনের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷ এরপরই সুখেন্দুশেখর রায়ের প্রশ্ন, আইন অনুযায়ী কেই গোপন জবানবন্দী দিলে তা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছেই দেন। সেই জবানবন্দী বাইরে বা চিঠি বিজেপির হাতে কী করে আসে?
আরও পড়ুন-টেরাকোটার আঁতুড়ঘর বিষ্ণুপুর
যতই তদন্তের ভার সিবিআইয়ের হাতে থাকুক তার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। এখানেই শেষ নয়, তৃণমূল সাংসদের কথায়, বিরোধীরা নিজেদের তদন্তকারী সংস্থা ভাবছে৷ তাদের বলব, আপনাদের কাছে কোনও তথ্য থাকলে প্রমাণ থাকলে তা সামনে আনুন। কিন্তু বিকৃত তথ্য পরিবেশন করবেন না। কেউ বলছে মাঠে পোড়ানো হয়েছে কেউ বলছেন শশ্মানে পোড়ানো হয়েছে। নির্যাতিতার পরিবার যখন এসব কিছু বলছে না তখন আপনারা কেন বলছেন?
সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে খাঁচার তোতা পাখি বলেছিল একথা মনে করিয়ে দিয়ে সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা বলে। তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে ভোটে হেরে এখন ষড়যন্ত্র করছে। পুলিশকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে উঠেপড়ে লেগেছে। রাজ্যে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে।