মুম্বই, ২৮ এপ্রিল : পাঁচে পাঁচ করে ফেলল কেকেআর (KKR)। তবে এটা হারের হিসেব। এরপর ছয়…সাত। এভাবেই এগবে কিনা সেটা নাইটরাই জানে। কিন্তু টানা পাঁচ-হারে কেকেআরের প্লে-অফ ভাবনা জোরালো ধাক্কা খেল। এতটাই যে বাকি সব ম্যাচ জিতলেও প্লে-অফের দরজা নাও খুলতে পারে শ্রেয়সদের জন্য। তখন সামনে থাকবে অঙ্কের জটিল হিসেব।
উমেশ কিন্তু শুরুতেই ধাক্কা দিয়েছিলেন। তাঁর কাছে এটাই প্রত্যাশিত ছিল। কেকেআরের (KKR) শুরুর ধাক্কাটা বরাবর তিনিই দিয়ে আসছেন। পৃথ্বীকে যখন প্রথম বলেই তুলে নিলেন, নড়েচড়ে বসল মাঠ। আসলে ১৪৯/৯ নিয়ে ইনিংস শেষ করার পর এরকমই একটা ঝটকা দরকার ছিল নাইটদের। উমেশ সেটা দিলেন। তারপর আনকোরা হরষিত সেটাকে আরেকটু বাড়িয়ে দিলেন সদ্য কোভিড থেকে ওঠা মিচেল মার্শকে (১৩) তুলে নিয়ে। বোর্ডে দিল্লি ক্যাপিটালস তখন ১৭/২।
কিন্তু এই দলে ওয়ার্নার বলে কেউ আছেন। যিনি ২৬ বলে ৪২ রানের ভীষণ জরুরি ইনিংস খেলে দিল্লির জয়ের ভিত তৈরি করে দিলেন। যে ভিতের উপর দাঁড়িয়ে পাওয়েল (৩৩ নট আউট) আর অক্ষর (২৪) দিল্লির জন্য চার উইকেটে জয় নিয়ে এলেন। মাঝে ৮২/২ থেকে ৮৪/৫ হয়ে গিয়েছিল দিল্লি। ঝটকা দিয়েছিলেন ম্যাচে ৩ উইকেট নেওয়া উমেশই। কিন্তু পাশে কাউকে পাননি তিনি।
নাইটদের ব্যাটিং অবশ্য এই ম্যাচেও একেবারে দাঁড়াল না। নাহলে গোটা ইনিংসে নীতীশ আর শ্রেয়স ছাড়া কেউ রান করতে পারলেন না কেন। নীতীশ ৩৪ বলে ৫৭ রান করে গেলেন। আর শ্রেয়সের অবদান ৩৭ বলে ৪২। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে বারবার টিম কম্বিনেশন বদলালে তার প্রভাব দলের উপর পড়বেই। এদিন যেমন কোথা থেকে হরষিত আর ইন্দ্রজিৎকে নামিয়ে দেওয়া হল। এতে লাভের লাভ কিছু হয়নি। ইন্দ্রজিৎ করলেন ৬ রান। বোলার হরষিতও তেমন সুবিধা করতে পারলেন না। কেকেআরের দল নিয়ে এই পরীক্ষা যত চলবে, ততই সমস্যা বাড়বে। হয়তো আইপিএল শেষ পর্যন্ত এটা চলবে!
আরও পড়ুন-পুণেতে আজ সম্মুখসমরে রাহুল ও রাবাডা
কেকেআর ব্যাটসম্যানরা কেন পাটা উইকেটে সুবিধা করতে পারলেন না, এই প্রশ্নের জবাবে এমন একজনের কথা বলতে হয় যিনি এক সময় নাইটদের ঘরের ছেলে ছিলেন। কিন্তু কুলদীপ যাদবকে টানা বসিয়ে রেখে তাঁর মনোবলই ভেঙে দিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। সেই কুলদীপ নতুন রূপে ফিরেছেন রিকি পন্টিংয়ের হাত ধরে। বৃহস্পতিবার প্রাক্তন এই নাইটের হাতেই ভেঙে খান খান হয়ে গেল শ্রেয়সদের ব্যাটিং। কুলদীপ ৩ ওভারে ১৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে গেলেন। এবারের আইপিএলে মোট ১৭ উইকেট। মাঝখানে শ্রেয়স আর নীতীশ মিলে তা-ও যখন ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করছিলেন, তখনই নাইট অধিনায়ককে তুলে নিয়ে সেই চেষ্টায় জল ঢেলে দেন এই চায়নাম্যান বোলার।
কেকেআর এদিন ভেঙ্কটেশ আইয়ারকে আবার ওপেনিংয়ে ফিরিয়ে এনেছিল। কিন্তু তাঁর আর ফিঞ্চের জুটিটা একেবারে দাঁড়ায়নি। আসলে কেকেআরের ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডার বলে কিছু ছিল না এদিন। ফিঞ্চ ৩, ভেঙ্কটেশ ৬, ইন্দ্রজিৎ ৬, নারিন ০, কেউ দাঁড়াতে পারেননি। এমনকী পরের দিকে এসে রাসেলও কোনও রান করতে পারলেন না। শুধু রিঙ্কু সিং ২৩ রান করতে পারলেন। তবে দিল্লিকে শক্ত টার্গেট দেওয়ার জন্য সেটা যথেষ্ট ছিল না মোটেই। আস্কিং রেট ওভার-পিছু সাড়ে সাত রান বড় কিছু ছিল না। দিল্লি অনায়াসে ৬ বল বাকি রেখে জয় তুলে নিল।