প্রতিবেদন : পুড়ছে দেশ। তীব্র গরমে জ্বলে যাচ্ছে রাজ্যের পর রাজ্য। আবহাওয়া বিজ্ঞানী আর কে জেনামানি জানিয়েছেন, ১২২ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এই বছরের মার্চ। উত্তর-পশ্চিম ভারতে মার্চে সর্বাধিক গড় তাপমাত্রা থাকত ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০০৪ সালে সেই রেকর্ড পার হয়েছিল। তবে এবার উত্তর-পূর্ব ভারতের মতো উত্তর-পশ্চিম ভারতেও তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি পৌঁছেছে। এমন ঘটনা স্মরণাতীত কালে বিরল। ১২২ বছরে এটাই রেকর্ড। রাজধানী দিল্লিও (Delhi) ১২ বছরের রেকর্ড গরমে (Temparature) পুড়ছে। তাপমাত্রা ছুঁয়েছে প্রায় ৪৪ ডিগ্রির ঘর। কয়েকদিনে ৪৭ ডিগ্রিও পৌঁছনোর আশঙ্কা রয়েছে। আরও দুঃসংবাদ হল, মৌসম ভবন এখনই তাপমাত্রা (Delhi- Temparature) কমার কোনও আভাস দেয়নি।
আবহাওয়া দফতরের রিপোর্ট বলছে, আগামী কয়েকদিন তাপপ্রবাহ বইবে দেশের একটি বড় অংশের উপর দিয়ে। আইএমডি দেশের নানা প্রান্তের তাপমাত্রার ওঠানামার পূর্বাভাসের ভিত্তিতে একটি সতর্কতা জারি করেছে। সেখানে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের একাংশে নতুন করে তাপপ্রবাহের সম্ভাবনায় কমলা সতর্কতা অর্থাৎ অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠছে, এই কমলা বা হলুদ সতর্কতার তাৎপর্য নিয়ে।
আরও পড়ুন: গুতেরেসের সফরের মাঝেই হামলা, কিয়েভে আছড়ে রুশ মিসাইল
আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করার প্রয়োজন হলেই এই কমলা সতর্কতা জারি করা হয়। যার মানে, বড় ক্ষতি হতে পারে। সম্ভাবনা থাকে প্রাণহানিরও। আবহবিদদের ব্যাখ্যা, আবহাওয়া পরিবর্তন কতটা বিপদ ঘটাতে পারে, তা বোঝাতেই বিভিন্ন রঙের সতর্কতা জারি করা হয়। ঝুঁকি কমানোর জন্য আগাম প্রস্তুতিই সবচেয়ে জরুরি। সতর্কতায় সবুজ রং থাকার অর্থ, কোনও সতর্কতার প্রয়োজন নেই। আবহাওয়া সুন্দর ও স্বাভাবিক রয়েছে, বিপর্যয়ের আশঙ্কা নেই। হলুদ সতর্কতা জারি মানে, বেশ কয়েকদিন ধরে খারাপ আবহাওয়া থাকবে। ছোটখাটো ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। অরেঞ্জ অ্যালার্ট বা কমলা সতর্কতা সরাসরি বিপদের ইঙ্গিতবাহী। অর্থাৎ, চিহ্নিত এলাকায় বহু মানুষ বিপদে পড়তে পারেন। রাস্তা, রেলপথ বন্ধ হতে পারে। বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যাহত হতে পারে। প্রাণহানিরও আশঙ্কা থাকে। স্বভাবতই সবচেয়ে মারাত্মক সূচক হল রেড অ্যালার্ট বা লাল সতর্কতা। একমাত্র চরম পরিস্থিতিতেই এই কালার কোড ব্যবহৃত হয়ে। এই কালার কোড ঠিক করার জন্য নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে আবহাওয়া দফতরের। ভৌগোলিক পরিস্থিতি, জলের ধরন, হাওয়ার গতি, তাপমাত্রার গড়— এমনই নানা বিষয় খতিয়ে দেখে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির একটি হিসেব কষা হয়। ঝুঁকির তীব্রতার নিরিখে এরপর সতর্কতার রং নির্ধারণ করা হয়। আবার এই রঙের ঘোষণাও জায়গা বিশেষে নির্ভর করে। প্রতিটি জেলায় যে সতর্কতা ঘোষণা হয়, মহকুমা স্তরেও সেটা যে একই থাকবে, তা নাও হতে পারে। এলাকাভিত্তিক অনেক বিষয় হিসেবের মধ্যে রাখতে হয়।