প্রতিবেদন : অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই রেপো রেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। প্রায় চার বছর বাদে একধাপে ৪০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ছে রেপো রেট। কোনও আগাম ঘোষণা ছিল না। আচমকাই বুধবার আরবিআইয়ের গর্ভনর শক্তিকান্ত দাসের নেতৃত্বে বৈঠকে বসে আর্থিক নীতি নির্ধারণ কমিটি। বৈঠকের পর শক্তিকান্ত দাস জানান, দেশে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেই রেপো রেট বাড়ানোর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি। যার জেরে রেপো রেট বেড়ে দাঁড়াল ৪.৪০ শতাংশ।
আরও পড়ুন-জলের দরে এলআইসির শেয়ার বিক্রি, মোদি সরকারের সিদ্ধান্তে ক্ষতি ৫৪ হাজার কোটি টাকা!
বুধবার থেকেই এই সিদ্ধান্ত লাগু হল বলেও জানিয়ে দেন তিনি। আরবিআইয়ের এই সিদ্ধান্তের জেরে মধ্যবিত্তের জীবন আরও দুর্বিষহ হবে বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তাঁদের মতে, রেপো রেট বাড়লে অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মেই গৃহঋণ থেকে শুরু করে গাডি়ঋণ, সবক্ষেত্রেই পড়ে প্রভাব। বাড়ে সুদের হার। ব্যাঙ্কগুলির কাছে গ্রাহকদের উপর চড়া সুদ বসানো ছাড়া পথ থাকে না। কারণ, যে সুদের হারে আরবিআই অন্য ব্যাঙ্কগুলিকে টাকা দেয়, সেটাই রেপো রেট। আর যে সুদের হারে ব্যাঙ্কগুলির কাছ থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক টাকা নেয়, তাকে বলা হয় রিভার্স রেপো রেট। তবে একদিকে বাড়লেও জমা টাকায় সুদ বাড়তে পড়ে বলে সাধারণ মানুষ যে আশা করছেন, তার তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের দাবি, ব্যাঙ্ক আমানতের উপর আর সুদ বাড়াবে না। কারণ, সুদ দেওয়া তাদের কাছে বোঝা। বড়জোর স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে।
আরও পড়ুন-শিল্পতালুকের জন্য ৫ একর জমি
আরবিআইয়ের এই আকস্মিক সিদ্ধান্তের জেরে এদিন ধস নেমেছে শেয়ার বাজারে। বহুপ্রতীক্ষিত এলআইসি-র আইপিও বাজারে নামা সত্ত্বেও বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে সেনসেক্সের পতন হয়। বাজার বন্ধের সময় সেনসেক্সের সূচক ছিল ৫৫ হাজার ৬৬৯। সবমিলিয়ে সেনসেক্সের পতন হয়েছে ১ হাজার ৩০৭ পয়েন্ট। আর ৩৯১ পয়েন্ট কমে নিফটির সূচক দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৬৭৮। আর এর জেরে মাত্র একদিনে লগ্নিকারীদের ক্ষতি হয়েছে ৬ লক্ষ কোটি টাকা! এর আগে শেষবার ২০১৮ সালের অগা স্টে রেপো রেট বাড়িয়েছিল আরবিআই। তখনও বাজার পড়েছিল। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই আঘাতের ফল হতে পারে মারাত্মক। আরবিআইয়ের পদক্ষেেপ জাতীয় অর্থনীতিতে গভীর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা।