৩৪ বছরে রাজ্যকে নরকঙ্কালের মালা পরিয়েছে বামফ্রন্ট সরকার। তৃণমূলের আমলে বাংলার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বৃহস্পতিবার, তৃতীয় তৃণমূল সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তিতে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে (Netaji Indoor Stadium) লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (Lakshmir Bhandar) প্রকল্পের চেক প্রদান অনুষ্ঠান এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেন, “১১ বছরে তৃণমূল সরকার যা করেছে, চ্যালেঞ্জ করছি কেউ করে দেখাক”। এর পরেই একে সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। জন্ম থেকে আমৃত্যু বিভিন্ন রাজ্য সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পান বাংলার মানুষ। কন্যাশ্রীরা টাকা পায়, কৃষকরা টাকা পায়। আছে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড। স্বাস্থ্য সাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (Lakshmir Bhandar)।
এদিন, ইন্ডোর স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। বিপুল সংখ্যক মহিলাদের উপস্থিতি তৃণমূল (TMC) সরকার তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁদের সমর্থনেই প্রতীক। এদিন, ২০লক্ষ মহিলার অ্যাকাউন্টে একসঙ্গে লক্ষ্মী ভাণ্ডারের টাকা পাঠানো হয়েছে বলে জানান মমতা। তিনি বলেন, “লক্ষ্মীর ভাণ্ডার মহিলাদের অধিকার।“
আরও পড়ুন: প্রয়াগরাজ-কাণ্ড: নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই NHRC অভিযোগ নিল, বললেন দোলা সেন
২০২১-এর নির্বাচনের আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, দুয়ারে রেশন, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড-সহ বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তৃতীয়বার বিপুল আসনে জয়ী হয় তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার পর থেকেই একে একে সব প্রতিশ্রুতি পালন করেন তিনি। সেই কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, “নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করেছি। আজ কাজগুলি করতে পেরে আমি গর্বিত।“
বিজেপির নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা করেছি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, ওরা করে কুৎসার ভাণ্ডার।“ যোগীরাজ্যের উদাহরণ টেনে উত্তরপ্রদেশে ধর্ষণের অভিযোগ জানাতে গেলে ধর্ষিতা হতে হয়। এটা বাংলা, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ নয়। অন্য রাজ্যের থেকে ভালো অবস্থা বাংলার। তিনি বলেন, কেউ দোষ করলে এখানে রাজনৈতিক রং দেখা হয় না। এমনকী, শাসকদলের কেউ জড়িত থাকলেও গ্রেফতার হন।
এদিন মমতার নিশানায় ছিল বিগত বাম সরকারও। কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওরা ৩৪ বছরে নরকঙ্কালের মালা পরিয়েছে। থানায় ডাইরি করতে যেতেই পারত না। এখন কিছু কিছু বাম বিজেপি হয়ে গিয়েছে।” শুধু তাই নয়, মমতা বলেন, আগে বলা হত লোডশেডিংয়ের সরকার, আর নেই দরকার। আর এখন আজ বাইরে থেকে লোক এসে বলে কী ছিল, আর কী হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ভুয়ো খবর দিলেও শাস্তি হতে পারে, আইনে সেটা বলা আছে। “ভেজাল খবর দেখবেন না“-বার্তা মমতার।
তিনি বলেন, কেউ মারা গেলে সৎকারের টাকা না থাকলে, সেই খরচ সরকার দেয়। স্কুল পডুয়াদের জুতো দেওয়া বিষয়ে মমতা জানান, জেলা শফরে গিয়ে প্রাথমিকের স্কুল পড়ুয়াদের পায়ে জুতো ন দেখেই তিনি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের স্কুল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এবং বিষয়টি তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জানান।
দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো হেরিটেজ তকমা দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও ফের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, ১০ বছর ধরে আমরা দুর্গাপুজোকে পৃষ্ঠপোষকতা করায় আজ ইউনেস্কো স্বীকৃতি দিয়েছে। এবিষয়েও নাম না করে বিজেপির কেন্দ্রের নেতাদের তুলোধনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।