প্রতিবেদন : দেশের ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ তাজমহল নিয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে গিয়ে কোর্টে মুখ পুড়ল গেরুয়া শিবিরের। এই ইস্যুতে বিজেপিপন্থী আবেদনকারীর জনস্বার্থ মামলা পত্রপাঠ খারিজ করে দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে বৃহস্পতিবার দুই বিচারপতির বেঞ্চ মামলাকারীদের তীব্র ভর্ৎসনা করে বলেছে, এভাবে জনস্বার্থকে মামলাকে উপহাসের বিষয়বস্তু করে তুলবেন না। এমনকী দুই বিচারপতির বেঞ্চের প্রতিক্রিয়া : এরপর তো আপনারা কোনওদিন আমাদের চেম্বার খুলেও দেখতে চাইবেন!
আরও পড়ুন-বৃষ্টিতে জলের নিচে পাকা ধান দুশ্চিন্তায় ঘুম উধাও চাষিদের
মোদি সরকারের একের পর এক জনস্বার্থ বিরোধী নীতির অভিঘাতে যখন সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত, তখন কৌশলে মানুষের ক্ষোভের অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার ছলচাতুরি শুরু করেছেন গেরুয়া ব্রিগেডের নেতারা। এই ফন্দিতেই এবার বিশ্ববিখ্যাত স্মৃতিসৌধ তাজমহল নিয়ে পরিকল্পিত রাজনীতি করতে নেমেছিল তথাকথিত হিন্দুত্ববাদী শিবির। মুঘল যুগের এই অসাধারণ শিল্পকর্মটিকে কেন্দ্র করে বিজেপিপন্থী সংগঠনগুলির দাবি, ‘তেজো মহালয়’ এক শিবমন্দিরের উপরেই তাজমহল গড়া হয়েছিল। সেইসঙ্গে এলাহাবাদ হাইকোর্টে তাজমহলের প্রকৃত ইতিহাস জানতে চেয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতা। তাঁর আর্জি ছিল, তাজমহলের বন্ধ থাকা ২২টি ঘর আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে খুলে দেওয়া হোক।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো বর্ষার মুখে সতর্ক জেলা প্রশাসন, ডেঙ্গু রুখতে পথে জেলাশাসক
২২টি তালাবন্ধ কক্ষের পিছনে ‘সত্য সন্ধান’ করতেই নাকি হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চের সামনে পিটিশন দাখিল বিজেপি আবেদনকারীর! এমনই ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন বিজেপির অযোধ্যা ইউনিটের মিডিয়া ইনচার্জ রজনীশ সিং। বৃহস্পতিবার বিজেপি নেতার এই আবেদন পত্রপাঠ খারিজ করে কঠোর সমালোচনা করেন হাইকোর্টের বিচারপতি ডি কে উপাধ্যায় ও বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থী। শুনানির সময় তাঁদের মন্তব্য, জনস্বার্থ মামলার (পিআইএল) জনস্বার্থ মামলাকে উপহাসের বিষয় করে তুলবেন না। আবেদনকারীকে আদালত বলে, কী জানতে চান আপনারা? তাজমহল কে নির্মাণ করেছেন, তার সন্ধান? নিরাপত্তার কারণে কেন স্মৃতিসৌধের একাধিক কক্ষ তালাবন্ধ করা হয়েছে সেই দাবির প্রসঙ্গে আদালত মামলাকারীকে বলে, নিরাপত্তার কারণে কক্ষগুলি বন্ধ করা হয়েছে এই যুক্তিতে আপনি যদি সন্তুষ্ট না হন, তাহলে তা চ্যালেঞ্জ করতে অন্য পদ্ধতি ব্যবহার করুন। আগে কিছু গবেষাণা করুন। কোথাও নিজেকে নথিভুক্ত করুন। পিআইএল ব্যবহার করে একটি ঐতিহাসিক বিষয় নিয়ে ঠাট্টা করবেন না।