সংবাদদাতা, হাওড়া : প্রয়াত গ্রামবাসীদের চোখের জলে বিদায় জানাল সুলতানপুর। একই সঙ্গে দাহ করা হল মৃতদের। সান্ত্বনা দিতে গিয়ে কান্না চেপে রাখতে পারলেন না বিধায়ক নিজেও। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টে নাগাদ রাজ্য সরকারের বিশেষ গাড়িতে উদয়নারায়ণপুরের সুলতানপুরে এসে পৌঁছল ওড়িশার গঞ্জামে দারিংবাড়িতে নিহত ৫ গ্রামবাসীর দেহ। দু’দিন আগেই যাঁদের হাসিমুখে বাসে তুলে দিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। তাঁদেরই নিষ্প্রাণ দেহগুলি আসার প্রতীক্ষায় বুধবার বিনিদ্র রাত কাটালেন তাঁরা।
আরও পড়ুন-ঘূর্ণাবর্তে রাজ্যে বাড়বে গরম
অনেক আগেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ক সমীর পাঁজা। প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা দেহগুলি নিয়ে এসে পাড়ায় নামাতেই কান্নার রোল ওঠে। বেড়ানোর নেশাই যে ৫ জন গ্রামবাসীর প্রাণ কেড়ে নেবে তা কল্পনাও করতে পারেননি এলাকার মানুষ। শোকস্তব্ধ পরিবারগুলিকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে নিজেও কান্না চেপে রাখতে পারেননি এলাকার বিধায়ক সমীর পাঁজা। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামের মানুষদের পেশা বলতে মূলত চাষবাস এবং দিনমজুরি। শখ বলতে বছরে একবার সবাই মিলে ঘুরতে যাওয়া। বেড়াতে যাবেন বলেই সারাবছর ধরে প্রতি মাসে কিস্তিতে টাকাও জমান তাঁরা। করোনার জন্য দু’বছর কোথাও যাননি। এইবার ফের বিশাখাপত্তনম ঘুরতে গিয়েই এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সবসময় এলাকায় থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে রয়েছি।’’
আরও পড়ুন-দুই বিজেপি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার হাল, কর্নাটকে নৃশংসভাবে যুবককে কুপিয়ে খুন
এদিন সুলতানপুর শ্মশানে ৫টি দেহ পাশাপাশি চুল্লিতে একসঙ্গে দাহ করা হয়। উদয়নারায়ণপুরের সুলতানপুর থেকে লাক্সারি বাস ভাড়া করে বিশাখাপত্তনম ঘুরতে যাবার পথে মঙ্গলবার গভীর রাতে ওড়িশার দারিংবাড়ির কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণ হারান ৪ মহিলা-সহ ৬ জন। জখম হন প্রায় ৫০ জন। নিহতদের মধ্যে একজন হুগলির বাসিন্দা। বাকি ৫ জনের বাড়ি উদয়নারায়ণপুরে। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রশাসনের তরফে সড়কপথে মৃতদেহগুলি দ্রুত নিয়ে আসা হয়। দুর্ঘটনার পরই রাজ্য প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে সমস্ত কাজকর্ম তদারকি করে দেহগুলি ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।