প্রতিবেদন : অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের ভিড় উপচে পড়ছে আফগানিস্তানের বিভিন্ন হাসপাতালে। অসহায় মা-বাবা শিশুদের মুখে সামান্য কিছু খাদ্য তুলে দেওয়ার জন্য কাতর আর্জি জানাচ্ছেন। এই মুহূর্তে দেশের নবীনতম প্রজন্মকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে এক কঠিন লড়াই লড়ছে কাবুল। ২০২১ সালের ১৫ অগাস্ট আফগানিস্তানের দখল নিয়েছিল তালিবান জঙ্গিগোষ্ঠী। তারপর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা আফগানিস্তানকে সব ধরনের সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে প্রবল আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েছে কাবুলিওয়ালাদের দেশ। গত এক বছরে আফগানিস্তান ভয়ঙ্কর খরার মুখোমুখি হয়েছে। ফলে দেশের ফসল উৎপাদনে জোরদার ধাক্কা। এসবের জেরে ব্যাপক খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে কাবুলে। এই মুহূর্তে লস্কর-গাহতে দেশের প্রধান হাসপাতালে কয়েক সেকেন্ড অন্তর গুরুতর অসুস্থ এক-একজন শিশুকে জরুরি বিভাগে আনা হচ্ছে। এটাই দেশের সার্বিক চিত্র।
আরও পড়ুন-প্রহসনের চেষ্টা? ত্রিপুরায় সরব তৃণমূল
রাষ্ট্রসংঘের এক পরিসংখ্যান বলছে, এই মুহূর্তে আফগানিস্তানের ৯৫ শতাংশ মানুষই পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে পাচ্ছেন না। পরিবারের মহিলাদের ক্ষেত্রে এই হিসাবটা ১০০ শতাংশের কাছাকাছি। অর্থাৎ মহিলাদের প্রায় সকলেই পর্যাপ্ত খাদ্যের অভাবে ভুগছেন। ক্ষুধার্ত শিশুরা মারা যাচ্ছে, নয়তো অপুষ্টিতে ধুঁকছে। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনের এশিয়া অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিরেক্টর জন সিফটন বলেছেন, প্রবল আর্থিক সঙ্কটের কারণে আফগানিস্তানে মানবিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। বিপন্ন শৈশব। দেশের বাজারে খাদ্যশস্য থাকলেও অর্থ সমস্যায় তা কিনতে পারছেন না মানুষ। স্বাস্থ্যকর্মী-সহ বিভিন্ন দফতরের কর্মীরাও নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন না।
আরও পড়ুন-স্কুলের পর এবার হাসপাতাল, আমেরিকায় ফের হামলা বন্দুকবাজের, নিহত চার
রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আফগানিস্তানের প্রায় দুই কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ চরমতম ক্ষুধার মধ্যে রয়েছেন। পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুরাই সবচেয়ে বেশি অপুষ্টিতে ভুগছে। প্রতি মুহূর্তে হাসপাতালগুলিতে আসছে একের পর এক অপুষ্টিতে ভোগা শিশু। হাসপাতালগুলিতে জায়গার এতটাই অভাব যে, অভিভাবকরা সন্তানকে কোলে নিয়ে হাসপাতালে দাঁড়িয়ে থাকছেন। এরই মধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করে তুলেছে।