প্রতিবেদন : ভবানীপুরে দম্পতি খুনের নেপথ্যে আসলে পারিবারিক সমস্যা। সম্ভবত সম্পত্তির লোভেই খুন করা হয়েছে মাঝবয়সি ব্যবসায়ী অশোক শাহ এবং তাঁর স্ত্রী রশ্মিতাকে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে প্রবল হয়ে উঠছে এই সম্ভাবনাই। মঙ্গলবার সকালে ভবানীপুরে মৃত দম্পতির মেয়েকে ফোন করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন-শাক দিয়ে মাছ ঢাকছে বিজেপি
উত্তরবঙ্গ সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলিপুরদুয়ার থেকেই ফোন করেন তিনি। তার আগে সোমবার রাতেই নগরপাল বিনীত গোয়েলের কাছ থেকে ঘটনার বিষয়ে জানতে চান তিনি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দোষীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন তিনি। সোমবার সন্ধ্যায় ভবানীপুরের হরিশ মুখার্জি রোডের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় ব্যবসায়ী দম্পতির দেহ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, পেছন থেকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে গুলি করা হয়েছে রশ্মিতা শাহকে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। আর অশোক শাহের পেটের ডানদিকে এবং গলায় পাওয়া গিয়েছে আঘাতের চিহ্ন। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এদিন এক প্রশ্নের উত্তরে স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই খুনের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। এখনও পর্যন্ত তদন্ত যা এগিয়েছে তাতে পুলিশের হাতে এসেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
আরও পড়ুন-আপনি ততদিন নেতা, যতদিন কাজ করবেন, কর্মীদের শতাব্দী
প্রথমত, গৃহকর্তা অশোক শাহ শেষমুহূর্তে ঘরে রাখা একটি লোহার মূর্তি হাতে তুলে নিয়ে বাধা দিতে চেষ্টা করেছিলেন আততায়ীকে। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, ছাতা মাথায় দিয়ে দু’জনকে বেরিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে পাশের সরু রাস্তা দিয়ে। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এই দৃশ্য। তদন্তের কাজে পুলিশ ব্যবহার করছে থ্রিডি স্ক্যানার। তদন্তকারীদের স্ক্যানারে এখন গৃহকর্তার মেজ জামাই। বিশেষভাবে নজর রাখা হচ্ছে তাঁর উপরে। ভবানীপুর থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পরিবারের লোকেদের। অনুমান, পরিচিত কেউ থাকতে পারে এই খুনের নেপথ্যে। শাহ পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খোয়া গিয়েছে বেশকিছু বহুমূল্য অলঙ্কার এবং নগদ ৩০ হাজার টাকাও। এই বিষয়টাও ভাবাচ্ছে পুলিশকে। লুঠপাটের উদ্দেশ্যে এই খুন কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কাছেই একটি নির্মাণস্থলের এক ঠিকা শ্রমিকও সন্দেহের তালিকায়। মুশকিলটা হচ্ছে, আশপাশের বেশ কিছু সিসিটিভি ক্যামেরা বিকল হয়ে রয়েছে। ফলে পুলিশকে বিশেষভাবে নির্ভর করতে হচ্ছে উল্টোদিকে এক চিকিৎসকের বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজের উপরে। তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু নথি সংগ্রহ করে হরিশ মুখার্জি রোডের ফ্ল্যাটটি সিল করে দিয়েছে পুলিশ।