সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার : আদি কামাখ্যাধাম নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে লোক ইতিহাস। প্রাচীন এই ঐতিহ্যবাহী ধামে ধুমধামের সঙ্গে হয় অম্বুবাচী মেলা। যার জনপ্রিয়তা ও মাহাত্ম্যকথা দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতেও পৌঁছেছে। প্রতি বছর বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান থেকে পুণ্যার্থীরা আসেন পুজো দিতে। কথিত, প্রায় দুশো বছর আগে কোচবিহারের তৎকালীন রাজা এখানে মা কামাখ্যা দেবীর পুজো শুরু করেন। রাজা শিকারে আসতেন আঠিয়া মোচার জঙ্গলে। জঙ্গলের পাশে নলখাগড়া ভরা স্থানে একদিন তাঁর প্রিয় হাতি কাদায় আটকে যায়। লোকলস্কর অনেক চেষ্টা করেও ওঠাতে পারেনি।
আরও পড়ুন-উত্তর-দক্ষিণ জুড়ে ২১ জুলাই ‘ধর্মতলা চলো’র প্রস্তুতি তুঙ্গে, রেকর্ড ভিড়ের জন্য মুখিয়ে সুতি
ফলে রাজা বাধ্য হয়েই ছাউনি ফেলেন এখানে। সারারাত প্রিয় হাতির চিন্তায় পায়চারি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ার পর মা কামাখ্যা তাঁকে স্বপ্নাদেশ দেন ওখানে তাঁর পুজো দেওয়ার জন্য। আদেশমতো পুজো দেওয়ার পরই হাতিটি নিজেই কাদা থেকে উঠে আসে। লোকমুখে এই অলৌকিক ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়ায় কোচ বা রাভা জনজাতির মানুষেরা পরে এখানে খড়ের চালা তৈরি করে মায়ের পুজো দিতে শুরু করেন। শোনা যায়, মায়ের নির্দেশে তখন থেকেই প্রতি বছর একই নির্ঘণ্ট মেনে গুয়াহাটির কামাখ্যা মন্দিরের সময় অনুযায়ী এই মন্দিরেও পুজো শুরু হয় অম্বুবাচী ছেড়ে যাওয়ার পরই। আগে শুধু মা কামাখ্যার পুজো হত।
আরও পড়ুন-নিষিদ্ধের ভাবনা
পরবর্তীকালে গ্রামের মঙ্গল কামনায় লোকবিশ্বাস অনুযায়ী মন্দির প্রাঙ্গণে বেশ কিছু উপ বা লৌকিক দেবতার থান বা ভিটি স্থাপন করে পুজো শুরু হয়। মূলত কোচ ও রাজবংশী জনগোষ্ঠীর মানুষের সঙ্গে গ্রামের অন্যরাও পুজোর আয়োজন করেন। ধামের নামেই কামাখ্যাগুড়ির নামকরণ বলে জানা যায়। পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটিয়ে বিশেষ দ্রষ্টব্যস্থান হিসেবে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা চলছে বর্তমানে।