বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই এবার ৮৯ লাখ কৃষকের হাতে ১০ হাজার টাকা করে তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।সোমবার বর্ধমানের সভা থেকে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে এই টাকা দেন তিনি। এছাড়া কৃষকদের যাতে কিষাণ মান্ডিতে গিয়ে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য ওসি এবং বিডিও-কে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিন তিনি বলেন, “অনেক কৃষক কিষাণ মান্ডিতে ধান বিক্রি করতে যান। সেই সময় তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যদি কেউ ফিরিয়ে দেন তাহলে আপনি বিডিও অফিসে যান, এফআইআর করুন। যাতে কোনও কৃষককে ধান নিয়ে ফিরে আসতে হয় সেটা দেখতে হবে। যে দায়িত্ব নেবেন না তাঁর ক্ষমতায় থাকার কোনও দরকার নেই। কৃষকদের বিক্রি করা জিনিসের ওজন যেন সঠিক থাকে।”
আরও পড়ুন-গুজরাট উত্তর প্রদেশে রাজ্যের নামে প্রকল্প থাকলে, বাংলায় আপত্তি কেন ? প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর
বর্ধমানে খারিফ মরসুমে নতুন কৃষকবন্ধু প্রকল্পে কৃষকদের সাহায্য প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখানে বোতাম টিপলাম আর ৮৯ লক্ষ কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে গেল। ১০ হাজার টাকা করে কৃষকদের সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। এই খরিফ মরসুমে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দেওয়া হল।’’
কিষাণ মান্ডি নিয়ে নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন। ‘‘এখানে সিএস আছেন, ডিএম (জেলাশাসক) আছেন, কোল্ড স্টোরেজের লোকেরা আছেন। অভিযোগ আসছে, কিষাণ মান্ডিতে ধান নিয়ে গেলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ফিরিয়ে দিলে, সময় মতো কাজ না করলে, আপনারা বিডিও অফিসে যাবেন। থানায় গিয়ে এফআইআর করবেন।
আরও পড়ুন-মান্ডিতে গেলে কৃষকদের হয়রানির শিকার হতে হয়, FIR-এর নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
মমতা আরও বলেন, ‘‘কৃষকরাই আমাদের সম্পদ। গত ১১ বছরে ৫৭ লক্ষ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন বেড়েছে।’’ কৃষকবন্ধু প্রকল্প নিয়ে মমতা বলেন, ‘‘শুধু কথা বলা নয়, আমরা কাজটাও করি। কৃষকদের জন্য সিঙ্গুরে ২৬ দিন অনশন করেছি। বিজেপির কৃষক বিরোধী মনোভাব। ওদের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলনে সর্বপ্রথম আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমাদের রাজ্যে কৃষকদের আয় তিন গুণ বেড়েছে। ফসলেরও ভাল দাম পাওয়া যায় এখানে।’’
এরই পাশাপাশি তিনি বলেন, ”স্বাস্থ্যসাথী কার্ড যারা নেবে না, পুলিশকে আমি বলছি এফআইআর করতে। সঙ্গে সঙ্গে হেলথ ডিপার্টমেন্টকে জানতে হবে।” এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ”বিয়ের জন্য তাড়াহুড়ো করো না। মা’কে বলো এই সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। কর্মসংস্থান মেলার মধ্যে দিয়ে ৩০ হাজার চাকরি রেডি আছে। আমার এখন লক্ষ্য আছে, চাকরি রেডি আছে। আমরা বিজেপির মতো নয়। বিজেপি বলছে চার বছর ট্রেনিং নিয়ে চার বছর চাকরি! তা দিয়ে সারাজীবন চলবে তো?
আরও পড়ুন-রাষ্ট্রপতি নির্বাচন: বিরোধী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা যশোবন্ত সিনহার
এমনকী রাজ্যে আবার একটু একটু করে বাড়ছে সংক্রমণ।তাই মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তা, আপনারা মাস্ক পরুন। করোনাবিধি মেনে চলুন। চাষিদের হয়রানি করা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।বলেন, ২০২৪ এর ডিসেম্বরের মধ্যে সব গ্রামের ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌঁছে যাবে।এদিন তিনি জানান, কালনা থেকে শান্তিপুরকে জুড়তে নতুন সেতু তৈরি হচ্ছে। এমনকী বর্ধমানে নতুন হেলিপ্যাড তৈরি হবে বলেও জানান। আশা ও আইসিডিএস-এর মেয়েদের ৮ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোন দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।