প্রতিবেদন : চলতি বছরের দুর্গাপুজো নিয়ে বড় পরিকল্পনার কথা আগেই ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের দুর্গাপুজোর ইউনেস্কোর স্বীকৃতি প্রাপ্তিকে সামনে রেখে একমাস ব্যাপী উৎসব উদযাপনের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার এই দুর্গাপুজোকে মঞ্চ হিসাবে করে স্থানীয় শিল্পপতিদের নিজেদের ব্যবসার প্রচার ও বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য প্রস্তাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-গভীর রাতে হাওড়ার ব্রিজে স্পাইডারম্যান!
বৃহস্পতিবার আলিপুরের সৌজন্যে শিল্প মহলের সঙ্গে বৈঠকে দুর্গাপুজোকে নিয়ে রাজ্যে বিনিয়োগ আকর্ষণের এই পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দুর্গাপুজোয় এবার ২০-২৫টা দেশের লোক আসবে। তাদের সামনে রাজ্যের সম্ভাবনার দিকগুলি তুলে ধরতে হবে। রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনার দিকগুলিকে নিয়ে একটি ছায়াছবি তৈরি করার ভাবনার কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষকে ওই তথ্যচিত্র নির্মাণের দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি টেলিভিশনেও রাজ্যের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে সমান্তরাল প্রচার চলবে। মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছেন এবার পুজো শুরু হওয়ার ঠিক এক মাস আগে অর্থাৎ ১ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টায় শ্যামবাজার থেকে শোভাযাত্রা হবে।
আরও পড়ুন-মাঙ্কিপক্স নিয়ে গাইডলাইন
দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দেওয়ায় ইউনেস্কো-কে ধন্যবাদ জানিয়ে পথে নামবে আমাদের শহর কলকাতা। গোটা রাজ্যের মানুষ এতে যুক্ত হবে। কেউ উলুধ্বনি দেবে, কেউ দোয়া করে শোভাযাত্রাকে সমর্থন জানাবেন। রেড রোডে হবে পুজো কার্নিভালও। তিনি বলেন, ‘‘এই পুজোর এক মাস আগে আমরা একটা মিছিল করব। ইউনেস্কো আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের কীভাবে গ্লোরিফাই করা যায়, সেটা দেখছি। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মেয়েরা শঙ্খধ্বনি দেবে। শহরে মিছিল হবে। মা-বোনেরা উলু দেবেন। সংখ্যালঘুরাও শামিল হবে। শঙ্খ, উলুধ্বনি কাকে বলে বাংলা দেখাবে।” উল্লেখ্য, ইউনেস্কো-র ইনট্যানজিবল হেরিটেজের স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলার শারদোৎসব। গত বছর ১৩-১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফ্রান্সের প্যারিসে আয়োজিত হচ্ছে ইন্টারগভর্নমেন্ট কমিটির ষষ্ঠদশ অধিবেশন। সেই অধিবেশনেই ‘কলকাতার দুর্গাপুজো’-কে ইউনেস্কো-র ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটি’-র তালিকায় স্থান দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-৫ বার কে-২ শৃঙ্গ জয়, অনন্য রেকর্ড মিংমার
শারদোৎসবের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে উদ্যোগী হয়েছিল রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন গিয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিভাগে। সেই আবেদনের মূল্যায়ন করেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। সেই বিচারেই এবার ‘হেরিটেজ’ তকমা পেল পশ্চিমবঙ্গের সেরা উৎসব। প্রসঙ্গত, শেষবার ২০১৭ সালে এই ধরনের স্বীকৃতি পেয়েছিল কোনও ভারতীয় মহোৎসব। সে বছর কুম্ভমেলাকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। তার আগের বছর ২০১৬ সালে যোগচর্চা এই স্বীকৃতি পেয়েছিল। তারও আগে ২০১৪ সালে পাঞ্জাবের ঐতিহ্যবাহী পিতল এবং তামার শিল্প সাংস্কৃতিক হেরিটেজের স্বীকৃতি পেয়েছিল। এ ছাড়াও ২০১৩ সালে মণিপুরের কীর্তন গানকে হেরিটেজের স্বীকৃতি দিয়েছি ইউনেস্কো৷ এরপর বাংলার দুর্গাপুজো।