প্রতিবেদন : আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের কাছে আল কায়দার একটি গোপন ঘাঁটিতে লুকিয়ে ছিল ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার অন্যতম চক্রী আয়মান আল-জাওয়াহিরি। আল কায়দার সেই গোপন ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় প্রাণ হারাল এই কুখ্যাত জঙ্গি নেতা। এমনটাই ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন সেনার এক আধিকারিক জানান, রবিবার ভোর ৬টা ১৮ মিনিটে কাবুলে আমেরিকার হামলায় মৃত্যু হয়েছে জাওয়াহিরির। ভোরে নিজের বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল জাওয়াহিরি। সে সময় দুটি ক্ষেপণাস্ত্র জাওয়াহিরি এবং তার বাড়ি লক্ষ্য করে আছড়ে পড়ে। তাতেই খতম হয় ৭১ বছরের এই কুখ্যাত জঙ্গি নেতা। তবে এই হামলায় জাওয়াহিরির ছাড়া আর কারও মৃত্যু হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই টেলিভিশনে জাওয়াহিরির মৃত্যুর খবর ঘোষণা করেন বাইডেন। জাওয়াহিরির মৃত্যু জঙ্গি সংগঠনটির পক্ষে বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। এই জঙ্গি নেতার মাথার দাম ঘোষণা করা হয়েছিল ২.৫ কোটি ডলার।
আরও পড়ুন-ভারোত্তোলনে রুপো বিকাশের
বাইডেন ট্যুইট করেন, তাঁর নির্দেশে শনিবার কাবুলে মানব-বিহীন বিমান বা ড্রোন হামলা চালায় আমেরিকা। ওই হামলাতেই মৃত্যু হয়েছে আল কায়দা প্রধানের। কত দেরি হল, সেটা বড় কথা নয়। কোথায় লুকিয়ে থাকার চেষ্টা করেছিল তাতেও আমাদের কিছু যায় আসে না। যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেন আমরা ঠিক খুঁজে বার করবই। বিচার শেষ হয়েছে এবং জঙ্গি নেতা মারা গিয়েছে। যত সময় লাগুক না কেন, যে বা যারা আমেরিকাবাসীর ক্ষতি করবে, তারা কেউ পার পাবে না। ৯/১১ বা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার হামলায় জড়িত ছিল জঙ্গি জাওয়াহিরি। ওসামা বিন লাদেনের সবচেয়ে কাছের মানুষ ছিল সে। শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচার মিলল।
আরও পড়ুন-আজ জিতলেই শেষ চারে হরমনপ্রীতরা
এদিন হোয়াইট হাউসের শীর্ষ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ৩১ জুলাই ভোরে কাবুলের একটি বাড়িতে ড্রোন হামলা চালিয়ে আল কায়দা প্রধান জাওয়াহিরিকে খতম করা হয়েছে। ওই জঙ্গিনেতাকে খতম করতে আফগানিস্তানের মাটিতে কোনও মার্কিন সেনার পা রাখারও প্রয়োজন হয়নি। মার্কিন প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার বিষয়ে ২০২০ সালে দোহাতে তালিবানের সঙ্গে আমেরিকার একটি চুক্তি হয়েছিল। কাবুলে জাওয়াহিরির উপস্থিতি স্পষ্টতই সেই চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। এদিকে, তালিবান শাসকও কাবুলে ড্রোন হামলার কথা স্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন-আজ নতুন লড়াই কিবুর দলের
আল কায়দা নেতার মৃত্যুতে নিরাপদ বিশ্ব : সৌদি আরবের বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাওয়াহিরি ছিল সন্ত্রাসবাদের এক বড় নেতা। তার নেতৃত্বেই আমেরিকা, সৌদি আরব-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নৃশংস হামলার পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়িত করা হত। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, জাওয়াহিরির মৃত্যু বিশ্বকে নিরাপদ করেছে। জাওয়াহিরির মৃত্যু নিরাপদ বিশ্বের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, জাওয়াহিরির মৃত্যু প্রমাণ করল যে, কোনওরকম যুদ্ধ না চালিয়েও সন্ত্রাসবাদের শিকড় উপড়ে ফেলা যায়। ৯/১১ হামলায় নিহতদের পরিবার জাওয়াহিরির মৃত্যুতে কিছুটা হলেও মানসিক শান্তি পাবে।