দেবর্ষি মজুমদার, নলহাটি: বীরভূমের নলহাটি থেকে পাঁচ কিমি দূরে বর্ধিষ্ণু গ্রাম বানিওর। এখানকার রায়চৌধুরি জমিদারবাড়ির পুজো ৩০০ বছরের প্রাচীন। এর বৈশিষ্ট্য, প্রতিমাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে পুজো হয়। বাড়ির ত্রয়োদশ প্রজন্ম স্কুলশিক্ষক পার্থ রায়চৌধুরি জানান, দেবীকে দড়ি দিয়ে মন্দিরের পিছন দিকে জানলার শিকে বেঁধে রাখা হয়। এটি কুলবিধি, যা নিয়ে উপকথার শেষ নেই। কোনও এক সময় দেবী কোনও এক মহিলাকে নাকি খেয়ে ফেলেন! তারপর থেকেই দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার নিয়ম। তার জন্য একজন ‘বাঁধিয়ে’ থাকেন। তাঁর কাজ ষষ্ঠীর ঘটস্থাপনের আগে দেবীকে বাঁধা এবং দশমীর দিন ঘট বিসর্জনের পর খোলা। বাঁধিয়েকে এক সময় জমিজমা দেওয়া হয়েছিল। বংশপরম্পরায় তাঁরা এই কাজ করেন।
আরও পড়ুন-গয়াগামী বাস দুর্ঘটনায় মৃত ৩, আহত ২০ পুণ্যার্থী
রায়চৌধুরি বংশের ষষ্ঠপুরুষ পুত্রলাভের ইচ্ছায় ১৭১৫ সালে দুর্গাপুজোর পত্তন করেন। বাড়ির ফটক পেরোলেই দুর্গামন্দির। বোধনের দিন ছটি ছাগ বলি হয়। সপ্তমী, সন্ধি ও নবমীতেও বলি হয়। বলির ক্ষেত্রে মানসা পাঁঠা বা বাইরের বলি শুধুমাত্র নবমীতেই হয়। সন্ধি ও নবমীতে একটি মোষ বলি হয়। মোষবলি দেখতে আশেপাশের গ্রাম থেকে মানুষজন এসে ভিড় করেন। অন্নভোগ হয় না, ফলমূল দিয়ে পুজো হয়। ত্রয়োদশীর দিন পারিবারিক মিলন উৎসব। একসঙ্গে পঙ্ক্তিভোজন হয়। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।