প্রতিবেদন : হারিয়ে যাওয়া অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার বাসনায় এবারে ফিল্মি দুনিয়ায় জমি হারানো বেইমান মিঠুন চক্রবর্তীকে বাংলায় দলের মুখ করতে চাইছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় নেতাদের আসলে মোটেই আর ভরসা নেই রাজ্য নেতাদের লম্বা-চওড়া বুলিতে। মুখে যতই রাজা-উজির মারুন না কেন, দিল্লির গেরুয়া নেতারা বুঝে গিয়েছেন রাজ্য বিজেপির ট্রেনি সভাপতি আর লোডশেডিং অধিকারীর আসল দৌড়। তাই ভরসা এখন প্রবাদেই— যেখানে বৃক্ষ নেই সেখানে ভ্যারেন্ডাই বৃক্ষ।
আরও পড়ুন-টিকিট নেই ৫ ঘণ্টা
দিল্লির গেরুয়া নেতাদের খুশি করতে শুক্রবারই কলকাতায় এলেন সেই ভ্যারেন্ডা মিঠুন। থাকার কথা দিন চারেক। কিন্তু তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেই। ছোট-মাঝারি-বড় মাপের তথাকথিত নেতা থেকে শুরু করে হাতেগোনা সমর্থককুল, সবার মনেই যে কথাটা উঁকিঝুঁকি মারছে— এমন রং বদলানো সিনেমার ডায়ালগসর্বস্ব মিঠুনকে দিয়ে হবেটা কী। বাম জমানায় জ্যোতি বসুকে ‘আঙ্কেল’ বলতেন, তারপরে জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৌলতে রাজ্যসভার সাংসদের স্বীকৃতি পেলেন। এখন আবার ইডি-সিবিআই থেকে বাঁচতে, নিজের ব্যবসা বাঁচাতে, পারিবারিক সমস্যা সামাল দিতে পায়ে পড়ে গিয়েছেন মোদি-অমিত শাহর পায়ে।
আরও পড়ুন-পুজোয় বৃষ্টি নয়
কিন্তু গ্রাম-বাংলার মানুষের সঙ্গে যাঁর কোনও সম্পর্কই নেই, ধারণা নেই গ্রামীণ অর্থনীতি, গ্রাম্য জীবন নিয়ে— পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোন অসাধ্যসাধন করতে পারবেন তিনি? তা ছাড়া ২১-এর ভোটে নিজেকে খোরাকে পরিণত করেছিলেন তিনি। মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন তাঁকে। তাই বাংলার গেরুয়া শিবিরের অনেকেই মনে করছেন, দিল্লির নেতারা আরও একটা বোঝা চাপিয়ে দিলেন তাঁদের ঘাড়ে। এ বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, রাজনীতিবিদ মিঠুন অকৃতজ্ঞ, সুবিধেবাদী, বিশ্বাসঘাতক। আগে নকশাল করতেন, পরে সিপিএম জমানায় বললেন ‘জ্যোতি আঙ্কেল’। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠালেন। মিঠুন বললেন, বোন যে সম্মান দিয়েছেন, যতদিন বাঁচব মনে রাখব। সেই বোনের পিঠেই ছুরি মেরে তিনি এখন বিজেপিতে। কিন্তু বাংলার মানুষ কখনও বিশ্বাসঘাতকদের ক্ষমা করে না।