প্রতিবেদন : প্রমাণ হয়ে গেল বদলা তত্ত্ব। সংসদের তৃতীয় বৃহত্তম দল তৃণমূল কংগ্রেসকে একটিও স্থায়ী কমিটির (Parliamentary Standing Committee) চেয়ারম্যান পদে না রাখার কারণ যে তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা সেকথা নিজেই স্বীকার করেছেন বিজেপির মন্ত্রী। শুধু নির্লজ্জ স্বীকারোক্তি নয়, বিজেপির তরফ থেকে প্রচার করা হচ্ছে সম্পূর্ণ অসত্য একটি তত্ত্ব। তাদের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় নাকি বিরোধী বিজেপি সদস্যদের কোনও স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান পদে রাখা হয়নি। অথচ রাজ্য বিধানসভায় এক বা দুটি নয়, নয়টি স্ট্যান্ডিং কমিটি দেওয়া হয়েছে বিজেপিকে। বিধানসভার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কমিটি হিসাবে দেখা হয় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিকে। সেই কমিটির চেয়ারম্যান পদে পরপর যে দু’জনকে রাখা হয়েছে তাঁরাও বিজেপির টিকিটে নির্বাচিত। ফলে তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় নেতৃত্বের কাছে এটা স্পষ্ট যে শুধুমাত্র রাজ্যের বিরোধী দলনেতার ব্যক্তিগত ইগোকে সন্তুষ্ট করতেই এত আয়োজন। রাজ্যে বিজেপির নেতাদের দাঁত-নখ নেই। তাই কেন্দ্র থেকে কলকাঠি নাড়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন-যোগীরাজ্যে নিষ্ক্রিয় পুলিশ, অপমানে আত্মঘাতী ধর্ষিতা
চিরকাল সংসদের অন্তত দুটি কমিটিতে (Parliamentary Standing Committee) চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হয় তৃণমূলকে। গত মঙ্গলবার কমিটিগুলি পুনর্গঠনের কথা ঘোষণা করার পর দেখা যায় এবার তৃণমূল কংগ্রেসের পোড়খাওয়া সাংসদদের কোনও কমিটির চেয়ারম্যান পদে রাখা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তৃণমূল। আর তখনই স্পষ্ট হয়েছে বিজেপির ঘৃণ্য বদলা রাজনীতির তত্ত্ব। প্রবীণ তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তৃণমূলের কাউকে যে পদে রাখা হবে না সে ব্যাপারে সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি এও জানিয়েছেন, তৃণমূল পরিচালিত সরকার বিধানসভায় বিজেপিকে কোনও স্থায়ী কমিটিতে স্থান দিচ্ছে না, বিশেষ করে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে। তাই তারাও তৃণমূলকে কোনও কমিটি দেবে না।
যে প্রসঙ্গে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংযোজন, গোটা বিষয়টা রাজ্য বিধানসভার স্পিকারকে জানিয়েছিলাম। উনি বললেন, সম্পূর্ণ অসত্য তথ্য। ৯টি স্ট্যান্ডিং কমিটির পদ দেওয়া হয়েছে, আর পিএসি-র চেয়ারম্যান পদে তো বিজেপির নির্বাচিত বিধায়ককেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। স্পিকার মহোদয়ের বক্তব্য, তার পরে তিনি কোন দলে থাকছেন, না চলে যাচ্ছেন, সেটা দেখা তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। পিএসসি-র দায়িত্ব না পেলে কোনও কমিটির দায়িত্ব-ই নেব না জানিয়ে তারা কোনও কমিটিরই দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেছে। এটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু তৃণমূল তো এরকম কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তৃণমূলই একমাত্র দল যাদের লোকসভা, রাজ্যসভা মিলিয়ে ৩৫ জন সাংসদ রয়েছে। দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দলের থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে পদ। সংসদীয় কাঠামো যেভাবে চলা উচিত, সেভাবে চলছে না।