সংবাদদাতা, হলদিয়া : হলদিয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্যামলকুমার আদকের বিরুদ্ধে টেন্ডার দুর্নীতির তদন্তে এবার ১২ সদস্যের সিট গঠন করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ৷ বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিটের নেতৃত্ব দেবেন হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিস সুপার শ্রদ্ধা পাণ্ডে। এএসপি ছাড়াও ১২ জনের ওই টিমে রয়েছেন ডিএসপি পদমর্যাদার এক আধিকারিক, তিনজন ইনস্পেক্টর এবং সাতজন সাব ইনস্পেক্টর। তদন্তকারী দলে ভবানীপুর, দুর্গাচক, মহিষাদল ও হলদিয়া মহিলা থানার ওসিরা রয়েছেন।
আরও পড়ুন-সীমান্তে ইউএপিএ চালু করার প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের
শহর ও গ্রামীণ এলাকায় কাজের চাপের জন্য সুতাহাটা থানার ওসিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এই টিমের নেতৃত্বে পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান নারায়ণচন্দ্র প্রামাণিক, চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল ও পুরসভার টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান সত্যব্রত দাস, অর্থ দফতরের চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল বিকাশ জানাকে ভবানীপুর থানায় ডেকে দিনভর জেরা করা হয়। এঁদের মধ্যে সত্যব্রত দাস ২০২১ সালে ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দেন। পুলিশ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৬ জন কাউন্সিলরকে ১৬০ সিআরপিসি ধারায় নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এঁদের মধ্যে কয়েকজন হাজিরা দিয়েছেন। মামলার সূত্র ধরে হলদিয়া পুরসভায় তদন্তের পাশাপাশি পুলিশ ঘাটাল পুরসভা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদেও তদন্ত করেছে। শ্যামলবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগকারী তাঁর সংস্থার নথিপত্র ব্যবহার করে ওই পুরসভা এবং জেলা পরিষদের টেন্ডার নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন-দুই বিজেপি নেতার কুকীর্তি সামনে, আরও বিপাকে সৌমেন্দু, ভাতা ৬ হাজার, তাতে কীভাবে বিদেশ সফর
পুলিশ হলদিয়া পুরসভায় তদন্তে নেমে টেন্ডারে জালিয়াতি করে একাধিক বড় খাল খননে দুর্নীতির খোঁজ পেয়েছে। পাতিখালি খাল ও গ্রিন বেল্ট ক্যানেল খননে বড়সড় দুর্নীতির হদিশ পেয়েছে তদন্তকারী দল। খাল খননের পর মাটি তোলার কাজে প্রাথমিকভাবে দু’কোটি টাকার একটি দুর্নীতি পুলিশের নজরে এসেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার বলেন, দল এবার বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নেবে। পিডব্লুডির ইঞ্জিনিয়ার, ট্রেজারির আধিকারিকদের সাহায্য নেওয়া হবে। আপাতত থানার মালখানায় বাজেয়াপ্ত ফাইলগুলি রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে সেগুলি দেখা হবে। এদিন বিকেলে তদন্তের কাজ দেখতে ভবানীপুর থানায় আসেন হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ৬ জন প্রাক্তন কাউন্সিলরকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তথ্য জানতে এঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দেড় হাজারের মতো ফাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তদন্তে প্রচুর বেনিয়ম ও দুর্নীতির আভাস মিলেছে। ফাইলগুলি খোলা হলে আরও অনেক তথ্য পাবে পুলিশ।