পঞ্চায়েত নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সব দল। প্রচারের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। রাজ্যজুড়ে একাধিক কর্মসূচি পালন করছে তৃণমূল কংগ্রেস। আজ বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষ্ণনগরে এই জনসভা করেছেন। নদীয়া সফরে তিনি মতুয়া ভোটও যে তৃণমূল কংগ্রেসের নজরে সেই কথা নতুন নয়। মঞ্চে রয়েছেন মহুয়া মৈত্র, মুকুল রায় সহ আরো অনেকে। রাস পূর্ণিমার শুভক্ষণে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বক্তব্য শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন-ভোররাতে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল উত্তরাখণ্ডের বেশ কিছু অঞ্চল
কৃষ্ণনগরে মঞ্চে উঠেই মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, ‘কৃষ্ণনগর, মুর্শিদাবাদ, বনগাঁ, রানাঘাট, শান্তিপুর খুব প্রিয় জায়গা। প্রতিবছর কৃষ্ণনগর আসি। করোনার সময় একটু সমস্যা হয়েছিল। এখন ডেঙ্গি একটু আছে। যত ঠান্ডা পড়বে ডেঙ্গি কমবে। তাই আমি পঞ্চায়েত, পুরসভার কর্মীদের বলব আপনারা সতর্ক থাকুন। এলাকা পরিষ্কার করুন। মশা বাড়তে দেবেন না। কোথাও আবর্জনা যেন জমে না থাকে। জল না জমে থাকে। পুজো গিয়েছে। অনেক আবর্জনা জড়ো হয়েছে।’
আরও পড়ুন-কু-কথায় বিজেপি নেতারা লজ্জা দিচ্ছেন, পাল্টা জবাব
মমতা বলেন, ‘বহুদিন আগে কৃষ্ণনগেরর মানুষ আমাদের দুটো লোকসভা দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন দুটো নির্বাচনে পর পর মাত্র কৃষ্ণনগর সিট আমরা পেয়েছি। রানাঘাট পায়নি। মাত্র বিধানসভাতেও একটা আসন পেলাম। কারণটা কী ভেবে দেখেছেন কি? আমি আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ করব, বিজেপি কী এমন করল, যে মিথ্যে কথা বলে লোকসভা সিট নিল। বিধানসভার সিট নিল। কাজ কিছু করেছে? একটাও কিছু করেছে?’
আরও পড়ুন-শীতের মুখেই বাড়ছে নলেন গুড়ের চাহিদা
বিজেপিকে মঞ্চ থেকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রানাঘাটে কী করেছে বিজেপি? নির্বাচন এলে যত মিথ্য়ে কথা। নির্বাচন চলে গেলে ধর্মে-ধর্মে যুদ্ধ।’ একই সঙ্গে যোগ করে বলেন, ‘এখানে হাসপাতাল, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নতি আমরা করেছি। ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস করেছি। ইসকনের জন্য ৭০০ একর জমি দিয়েছি।’
বিজেপি ছাড়াও পাশাপাশি সিপিএম, কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘নির্বাচনের সময় এরা এক হয়ে যায়। সব রাম-বাম-শ্যাম। জগাই-মাধাই। এ ওর কাছ থেকে কানাঘুষো করে। নানা রকম আদানপ্রদান করে। রাজনীতির সঙ্গে আরও কিছু চলে। নির্বাচন আসলে মনে পড়ে ক্যা ক্যা ক্যা। ক্যা নিয়ে আপনাদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করে। নির্বাচন আসলেই তাদের মাথায় এনআরসি ঢোকে। মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করে। রাজবংশী-পাহাড়ি দিয়ে নিয়ে বাংলা ভাগ করার চেষ্টা করে। তারা করতে চায় না। সবাই এক নয়। নদিয়ায় রানাঘাটের সাংসদ আপনাদের জন্য কিছু করেছে। তাহলে ভোটটা দেন কেন?’
আরও পড়ুন-চৈতন্যভূমে মুখ্যমন্ত্রী,পঞ্চায়েতের আগে বার্তা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন দুয়ারে সরকার, লক্ষ্মীর ভান্ডার, সুডেন্ড ক্রেডিট কার্ড, স্বাস্থ্য সাথী সহ সরকারের একাধিক পরিষেবার কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘নদিয়ার মানুষ ভাল মানুষ। শান্তিপ্রিয় মানুষ। ধর্মপ্রাণ মানুষ। উদ্বাস্তু মানুষ। আর এই মানুষগুলোর মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়। আবার বলে বেঙ্গলে ক্যা করবে। ক্যা মানে কী? সিটিজেনশিপ। বুকে হাত দিয়ে বলুন, চাকরি করেন? দোকান আছে? রেশন কার্ড পান? স্বাস্থ্যসাথী পান? লক্ষ্মী ভান্ডার পান? জমি জায়গা আছে? সবই যখন আছে, আপনার অধিকার।’