অমিত ব্রহ্ম, দোহা: এগারো বছর কাতারে আছি। এত লোক আগে দেখিনি। দোহায় আমরা বেশ নিরিবিলি থাকি। দিনের বেলা তাও লোকজন থাকে। রাতের দিকে পথ-ঘাট শুনশান। খুব দরকার না হলে কেউ বাড়ি থেকে বেরোয় না।
অন্য কিছু নয়, এখানকার জীবন এরকম। কিন্তু চেনা ছবিটা দুম করে বদলে গিয়েছে। রাস্তায় ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার জার্সি পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে সমর্থকরা। এত মানুষ। এত ভাষা। কেউ এসেছেন লাতিন আমেরিকা থেকে। কেউ ইউরোপ বা অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু কী অদ্ভুত মিলমিশ সবার। যেন কতদিনের চেনা। দেখা হলেই কুশল জানতে চাইছেন। ভাষা বাধা হচ্ছে না। ফুটবলই পারে মানুষের এমন মেলবন্ধন ঘটাতে।
আরও পড়ুন-বীরবাহার জুতো ধরে ক্ষমা চান শুভেন্দু
আমি থাকি আল ওয়াকরা নামে একটা জায়গায়। যেখানে আমার মতোই বহু বাঙালির বাস। আমাদের এখানে বাঙালি কমিউনিটি আছে। নানা অনুষ্ঠান হয়। আর বাঙালি মানেই ফুটবল। আমরা সবাই অনেকদিন ধরে বিশ্বকাপের অপেক্ষায় ছিলাম। বলতে পারেন দিন গুনছিলাম। কিন্তু বিশ্বকাপ যে ঠিক কতবড় তার কোনও ধারণা ছিল না। এখন বুঝতে পারছি। এটাই যেন গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ।
আমার বাড়ির কাছে আল জানোউব স্টেডিয়াম। ইংল্যান্ড এখানে শিবির করেছে। ইচ্ছে থাকলেও ওদিকে যাওয়া হয়নি। তবে শুনেছি হ্যারি কেন, মার্কাস র্যাশফোর্ডদের নিরাপত্তায় মরুভুমির বাহন উটও নেমে পড়েছে। এটা আমাদের জন্য পরিচিত দৃশ্য হলেও বাইরের লোকেরা নিশ্চয়ই অবাক হয়েছেন। কথা-বার্তায় সেটা বুঝতে পারছি। আর একটা জিনিস নিয়েও খুব চর্চা হচ্ছে। পানীয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা। ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনো শুনলাম বলেছেন, তিন ঘন্টা কেউ বিয়ার না খেলে মরে যাবে না! খুব সত্যি কথা। তবু এরপর ফুটবল ভক্তদের কি প্রতিক্রিয়া হয় তা দেখার আপেক্ষায় থাকলাম।
আরও পড়ুন-ঘাতকের হাতে রক্তের দাগ…
সবাই জানেন এখানে দিনের বেলায় খুব গরম। এই গরম ফুটবল তারকাদের বেশ মুশকিলে ফেলেছে। মেসি যেমন সন্ধ্যার পর প্র্যাকটিসে আসছেন। কিন্তু দিনেও অনেক ম্যাচ রয়েছে। আপনারাও সেটা জানেন। মাত্র আড়াই ঘন্টা টাইম ডিফারেন্স আপনাদের সঙ্গে আমাদের। সন্ধ্যার পর বড় মনোরম আবহাওয়া এই দেশে। রাতের দিকে ঠান্ডা পড়ে। কিন্তু ফুটবলি উত্তাপ ঠান্ডা পড়তে দেবে কিনা ভেবে চিন্তায় আছি!