সংবাদদাতা, কাটোয়া : পাশের বাড়ির মেয়েকে নিয়ে তথ্যচিত্র। তাও আবার দেখানো হয় বিদেশের চলচ্চিত্র উৎসবে। একের পর এক ভয়ঙ্কর চ্যানেল হেলায় পেরোনো কালনার সোনার মেয়ে সায়নী দাসকে নিয়ে তথ্যচিত্রটি তৈরি করেছেন সঞ্জীব নাথ। ‘সায়নী— জলপরী, দ্য নাইয়াড’ শীর্ষক ছবিটি দেখানো হয়েছে কেনিয়ার ইনটারন্যাশনাল স্পোর্টস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে।
আরও পড়ুন-ইসিএল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দুর্নীতি, রানিগঞ্জে আবার খনি এলাকায় ধস
মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা সায়নীর সংগ্রাম, হাজারো প্রতিকূলতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে উদ্দাম সাগরের ভাঁজে ভাঁজে মোড়া সাফল্য কাহিনিটি অকুন্ঠ প্রশংসা কুড়িয়েছে উৎসবে। পরিচালক সঞ্জীব নাথ বলেন, ‘ইতিমধ্যে ইংলিশ চ্যানেল, রটনেস্ট চ্যানেল, ক্যাটলিন ও মলোকাই চ্যানেল পার হয়ে সাঁতারের আন্তর্জাতিক আঙিনায় নিজেকে চিনিয়েছেন সায়নী। সাত সাগর পেরোনার লক্ষ্যে অবিচল সায়নীর জীবনের বাঁকে বাঁকে চিত্রনাট্যের বিস্তর মশলা। মফসসল শহর থেকে উঠে আসা একটি মেয়ে শুধু নিষ্ঠা আর জেদকে সম্বল করে কীভাবে নজর টানল, সেটাই তথ্যচিত্রে তুলে ধরেছি। সায়নী দেশের তামাম সাধারণ মেয়ের অনুপ্রেরণা।’
আরও পড়ুন-দুর্গাহুড়ি ইকোপার্ক বাঁচাতে উদ্যোগী প্রশাসন
পর্দায় নিজের সঙ্গে উথালপাথাল সমুদ্রের ‘মিতালি’ দেখে আপ্লুত সায়নীও। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে ফুটবল বা ক্রিকেট নিয়ে যত চর্চা হয়, সাঁতার নিয়ে তেমন হয় না। সঞ্জীববাবুকে কৃতজ্ঞতা সাঁতারকে তথ্যচিত্রে ঠাঁই দেওয়ার জন্য।’ ইংলিশ চ্যানেলে নামার জন্য খরচ জোগাড় করতে কালনার বারুইপাড়ার বাড়ি বন্ধক দিতে হয় সায়নীর বাবা তথা প্রশিক্ষক, পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক রাধেশ্যাম দাসকে। তারপর কখনও রাজ্য সরকার, কখনও মন্ত্রী, কখনও কোনও সহৃদয় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তথ্যচিত্রের পরতে পরতে রয়েছে জলপরি সায়নীর ছিলাটান কাহিনি। ছবিটি দেখে সাতসাগর জয়ের স্বপ্ন ছুঁতে এখনও বাকি তিন সাগর পেরোতে সায়নী বা তাঁর বাবাকে যেন আর হাত পাততে না হয়, স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কেউ কেউ এগিয়ে আসুন, চাইছেন কালনাবাসী।