প্রতিবেদন : ক্রিকেট ফাইনালের বর্ণময় মঞ্চ থেকেই ঘোষিত হল ২৪-এর নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের আগাম বিজয়বার্তা। তুমুল হাততালিতে ফেটে পড়ল সমবেত জনতা। শুক্রবার ছিল ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রামে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ‘জেনারেল সেক্রেটারি কাপ’-এর ফাইনাল। আয়োজক ‘টিম অভিষেক’।
আরও পড়ুন-বাম বঞ্চনার জবাব মিলেছে
এই খেলার মঞ্চে দাঁড়িয়েই রীতিমতো আত্মবিশ্বাসের সুরে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মুখপাত্র কুণাল ঘোষের ঘোষণা, সামনের টুর্নামেন্টে প্রধান অতিথির আসনে বসবেন ঝাড়গ্রামের তৃণমূল সাংসদ। ২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে ৪-০ গোলে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ৪টি আসনের মধ্যে ৪টিই পেয়েছে তৃণমূল। এবারে লোকসভাতেও নিশ্চিত জয়ের প্রতীক্ষা। নিশ্চিত সাফল্যের পক্ষে কুণালের যুক্তি, একটা সময়ে এই মাঠ এবং চারপাশের জঙ্গল ছিল আতঙ্কের জায়গা। এখানে-ওখানে পড়ে থাকত মৃতদেহ। কিন্তু আজ? সন্ধ্যায় তারিয়ে তারিয়ে আমরা উপভোগ করছি ক্রিকেটের ফাইনাল। এর নামই পরিবর্তন।
আরও পড়ুন-আমেরিকায় প্রবল তুষারঝড়ের শঙ্কা, বাতিল হল চার হাজার উড়ান
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের ধারায় আমূল বদলে গিয়েছে রক্তভেজা ঝাড়গ্রামের মাটি। খেলার মঞ্চে এদিন বিশেষ আকর্ষণ ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা এবং স্নেহাশিস চক্রবর্তী। নয়াগ্রামের মতো গ্রামীণ এলাকায় টুর্নামেন্টের ভাবনা পৌঁছে দেওয়ার জন্য টিম অভিষেককে ধন্যবাদ জানালেন বীরবাহা হাঁসদা। তাঁর কথায়, সুন্দর আগামীর আশায় এভাবেই ঘরে-ঘরে পৌঁছে গিয়ে মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী হবেন তৃণমূল কর্মীরা। খেলার প্রকৃত তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর প্রস্তাব, টুর্নামেন্ট আয়োজনের পাশাপাশি খেলোয়াড় তৈরির জন্য আয়োজন করা হোক প্রশিক্ষণ শিবিরেরও। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, জঙ্গলমহলের মাটি থেকেই বিকশিত হবে ক্রীড়া-প্রতিভা।
আরও পড়ুন-বাংলার মুকেশ ৫ কোটিতে দিল্লিতে কেকেআরে শাকিব ও লিটন
এখানকার শিশুরাই আগামিদিনে নেতৃত্ব দেবে দেশের। বন্দুকের লড়াইয়ের সেই ভয়ঙ্কর দিনগুলিকে পেছনে ফেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কেমন করে শান্তি এবং অর্থনৈতিক প্রগতির পথ ধরেছে জঙ্গলমহল তা ব্যাখ্যা করেন কুণাল ঘোষ। তুলে ধরেন গত এক দশকে এখানকার পর্যটনশিল্পের উত্তরণের কাহিনি, ঘরের মেয়েদেরও ফুটবল পায়ে মাঠে নামার কথা। সামনের পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে শান্তিকামী বাসিন্দাদের সতর্কবার্তাও শোনালেন তিনি। বললেন, ঝাড়গ্রামে কোনও অশুভশক্তিকে পা রাখতে দেবেন না। ওরা আপনাদের জীবনের কোনও উপকার করতে আসবে না। শুধুই ভুল পরামর্শ দেবে, কুৎসা করবে। স্পষ্ট ইঙ্গিত বিজেপির দিকে। বিজেপি যেখানে নিজেরা ঢুকতে পারে না, সেখানে কেমন করে ভাড়াটে সেনা সিপিএম-কংগ্রেসকে ঢুকিয়ে দেয় তাও বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। টুর্নামেন্টের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন সুমন সাহু। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক দুলাল মুর্মু, যুবনেতা সুদীপ রাহা, ড. মণিকান্ত পড়িয়া, চূড়ামণি মাহাতো, শান্তিরঞ্জন কুণ্ডু প্রমুখ।