রায়পুর, ২১ জানুয়ারি : একপেশে ম্যাচ। এখনও পর্যন্ত একপেশে সিরিজ। শনিবার রায়পুর ম্যাচের পর এটাই নির্যাস ভারত-নিউজিল্যান্ড একদিনের সিরিজের।
কিউয়িরা ১০৯ রান তুলেছে ৩৪.৩ ওভারে। ভারত ২০.১ ওভারে ২ উইকেটে ১১১ রান তুলে এই ম্যাচ জিতল ৮ উইকেটে। এতে সিরিজও চলে এল রোহিতদের হাতে। আপাতত ২-০-তে এগিয়ে ভারত। শেষ ম্যাচ জিতলেই ফের হোয়াইটওয়াশ। একেবারে শ্রীলঙ্কা সিরিজের মতো।
একদিনের এই সিরিজ ৩-০-তে জিতলে ওডিআই র্যাঙ্কিংয়ে একে উঠে আসবে ভারত। পরিস্থিতি সেদিকেই এগোচ্ছে। আপাতত। তবে রায়পুরের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে উইকেট বড্ড বেশি বোলারদের পাশে থাকল। আরও পরিষ্কার করে বললে সিমারদের পাশে। যে ম্যাচে ১০০ ওভার খেলা হতে পারত, সেটা শেষ হল ৫৪.৪ ওভারেই। পণ্ডিতরা ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই পারেন!
আরও পড়ুন-ছাঁটাইয়ের কোপে উইপ্রো কর্মীরাও
দেশের ৫০তম ভেনু হিসাবে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ হল রায়পুরে। কিন্তু গ্রিন টপ উইকেট সিমারদের হয়ে খেলল। ছত্তিশগড় ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এই ম্যাচের পর বিশ্বকাপের অন্তত একটি ম্যাচ পাওয়ার আশা রাখছে। আশঙ্কা এখন এটাই যে, এত বেশি বোলিং ফ্রেন্ডলি উইকেট আইসিসি কীভাবে নেয় সেটাই।
৫০ ওভারে ১১০ রান টার্গেট মানে ওভার পিছু দুইয়ের সামান্য বেশি। ভারতীয়রা সেটা অনায়াসে তুলে দিলেন। রোহিত যখন আউট হলেন, বোর্ডে রান ৭২। ৫১ বলে ৫০ রান করে গেলেন ভারত অধিনায়ক। সাতটি চার, দুটি ছয়। কিন্তু বিরাট কোহলিও (১১) খুব তাড়াতাড়ি ফিরে গেলেন। ভারত তখন দুই উইকেটে ৯৮। এরপর অবশ্য আর কোনও উইকেট না হারিয়েই জয়ের রান তুলে নেন শুভমন গিল (৪০) ও ঈশান কিসান (৮)। দু’জনেই নট আউট থেকে গেলেন শেষপর্যন্ত।
আরও পড়ুন-বিজেপির মিথ্যাচার ক্ষুব্ধ মালিওয়াল
এর আগে নিউজিল্যান্ড ইনিংসের প্রথম পাঁচ ব্যাটারের রান ছিল যথাক্রমে ০, ৭, ২, ১, ১। ফিন অ্যালেন, ডেভন কনওয়ে, হেনরি নিকলস, ড্যারেল মিচেল ও অধিনায়ক টম লাথাম, এঁরা কেউ রান পাননি! ১০.৩ ওভারে ১৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসা দলের তাই ১০৯ রানে অল আউট হওয়া নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। রানটা ১০০-র মধ্যেই থাকবে কি না তা নিয়ে একসময় যখন গবেষণা চলছে, তখন গ্লেন ফিলিপস (৩৬) আর মাইকেল ব্রেসওয়েল (২২) ৫০ রান যোগ করে দলকে কিছুটা জমি তৈরির সুযোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু তারপর মিচেল স্যান্টনার (২৭) ছাড়া আর কেউ দাঁড়াতে না পারায় ৩৪.৩ ওভারে গুটিয়ে গেল নিউজিল্যান্ডের ইনিংস।
দেশের ৫০তম ভেনু হিসাবে আন্তর্জাতিক ম্যাচে শনিবার অভিষেক হল রায়পুরের। কিন্তু গ্রিন টপ উইকেটে কিউয়িদের ৩৫তম ওভারে অল আউট হয়ে যাওয়াটা তাদের জন্য ভাল বিজ্ঞাপন হল না। মহম্মদ শামি ৬ ওভারে ১৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে গেলেন। ১৬ রানে ২ উইকেট হার্দিক পাণ্ডিয়ার। সিমারদের মধ্যে সিরাজ ও শার্দূল একটি করে উইকেট নিয়েছেন। সাতটি উইকেট সিমাররা ভাগাভাগি করে নেওয়া ছাড়া তিনটি উইকেট গিয়েছে স্পিনারদের পকেটে। কুলদীপের ২৯ রানে ১টি উইকেট। বাকি ২টি উইকেট নিয়েছেন ওয়াশিংটন সুন্দর। ম্যাচের সেরা হন শামিই।
আরও পড়ুন-নিউজিল্যান্ডের নয়া প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স
শহিদ বীর নারায়ণ সিং আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এদিন ৪৫ হাজার লোকের সামনে খেলা শুরু হয়েছিল। রোহিত শর্মা টসে জেতার পর অদ্ভুত এক দৃশ্য দেখা গেল। ব্যাটিং না বোলিং নেবেন, সেটাই ঠিক করতে পারছিলেন না ভারত অধিনায়ক। ‘‘টস নিয়ে এত কথা হল। কিন্তু সব মাথা থেকে উড়ে গিয়েছিল। যাক গিয়ে, আমরা আগে বলই করব।’’ পরে বললেন রোহিত। এই উইকেটে আইপিএলের ম্যাচ হলেও আন্তর্জাতিক ম্যাচ এই প্রথম। রোহিত তাই আগে বল করে নিতে চেয়েছিলেন। যাতে উইকেট দেখে ব্যাট করতে পারেন। তবে বোলাররা তাঁর কাজ সহজ করে দেন। আগের ম্যাচে ব্রেসওয়েল আর স্যান্টনার ভারতীয় বোলারদের পরীক্ষার সামনে ফেলে দিয়েছিলেন। ৩৪৯ রান করেও ভারত জিতেছিল ১২ রানে। শনিবার কিন্তু শামি-হার্দিক-সিরাজ মিলে শুরু থেকে চেপে ধরেছিলেন কিউয়িদের। ম্যাচটা তখনই তাদের হাত থেকে বেরিয়ে যায়।