নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : মোদিঘনিষ্ঠ আদানি শিল্পগোষ্ঠী ইস্যুতে এবার অত্যন্ত কড়া অবস্থান নিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেইসঙ্গে সিবিআই-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সির পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকার কড়া সমালোচনা করা হল। বৃহস্পতিবার রাজধানী দিল্লিতে এক সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার মুখ্যসচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে তৃণমূল কংগ্রেস। যৌথ সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে সুবিচার হবে বলে মনে হয় না। তবে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে ডাকার সুযোগ পাওয়া যাবে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় এদিন সাংবাদিকদের বলেন, অবিলম্বে ইন্টারপোলকে অ্যালার্ট করে, লুকআউট নোটিশ জারি করে গ্রেফতার করতে হবে গৌতম আদানিকে। কারণ এর আগে দেখা গিয়েছে, বিজেপি সরকার ঘনিষ্ঠ বহু ব্যবসায়ী দেশের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছেন বা এমন কোনও দ্বীপে গিয়ে অবস্থান করছেন যেখানকার সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ নীতি নেই। সেরকম ঘটনা যাতে আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার না করতে পারেন তাই তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, অবিলম্বে যেন লুকআউট নোটিশ জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার।
আরও পড়ুন-আদানি ইস্যুতে উত্তাল সংসদ, জেপিসি দাবি
সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, কোনও মতে শেয়ার কিনে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। গৌতম আদানির ৮ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। সেইসঙ্গে ব্যাঙ্কগুলিরও ৮০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। সমপরিমাণ টাকা ভারতীয় ব্যাঙ্কগুলির আদানির থেকে দেনা আছে। সেবির আইন অনুযায়ী এই কারচুপি কীভাবে ঘটল তা দেখতে হবে। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ধনকুবের গৌতম আদানির উদ্দেশে কড়া মন্তব্য করে বলেছেন, আমাদের সঙ্গে কি তামাশা করা হচ্ছে?
আরও পড়ুন-পুড়ে ছাই ১৮ দোকান
বাজেট পেশের দিনেই গৌতম আদানি একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন, নতুন শেয়ার ছাড়ার প্রক্রিয়া স্থগিত রেখেছে সংস্থা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাজারের অস্থিরতা বিবেচনা করে ফলো-অন পাবলিক অফার বা এফপিও বাতিল করা হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের দ্রুত এফপিও-র অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন মহুয়া মৈত্র। তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে তামাশা করা হচ্ছে। বোকা বানানো হচ্ছে সেবিকে। বাজারে ব্যাপক কারসাজি করা হয়েছে। অন্যদিকে সুখেন্দুশেখর রায় বলেছেন, যেখানে বাইরের একটি সংস্থা হিন্ডেনবার্গ পুরো বিষয়টিকে এত দ্রুত সামনে নিয়ে এল সেখানে সেবি এখনও পর্যন্ত কোনও অবস্থানে পৌঁছতে পারছে না কেন?
আরও পড়ুন-বাজেটের আগে বিধায়কদের প্রশিক্ষণ
এখন সব কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা রহস্যজনকভাবে নীরব কেন? পানামা পেপার্সে এই বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে। আদানির শেয়ার এখন শুকনো পাতা ছাড়া কিছু নয়। আমরা এই মুহূর্তে চরম অরাজকতার মধ্যে বাস করছি। সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে তদন্ত হওয়া উচিত। কারণ জাতীয় বিপর্যয় হয়ে গিয়েছে। আদানির কর্ণধার এবং তাঁর সংস্থার বাকি লোকজন যেন দেশ ছেড়ে পালাতে না পারে দেখতে হবে। এয়ারপোর্টগুলিকে অ্যালার্ট করা উচিত। লুক আউট নোটিশ জারি করতে হবে। অবিলম্বে সরকারের উচিত ইন্টারপোলকে সতর্ক করা গৌতম আদানির বিষয়ে।