সংবাদদাতা, দুর্গাপুর : গোটা দুর্গাপুর জুড়ে এখন একটাই চর্চার বিষয়। নবম শ্রেণির ছাত্রী প্রজ্ঞা বিশ্বাসের বিস্ময়কর আবিষ্কার। চার চাকা গাড়ি ও বাইকের জন্য তার আবিষ্কৃত ‘ভেহিকল অ্যালকোহল ডিটেক্টর অ্যান্ড ফেস স্ক্যানার’ পথ-সুরক্ষায় (Prevention of Car accident) বিপ্লব আনতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কী এই আবিষ্কার? কীভাবেই বা তা পথদুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে (Prevention of Car accident) নিতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা? প্রজ্ঞার আবিষ্কৃত ‘অ্যালকোহল ডিটেক্টর অ্যান্ড ফেস স্ক্যানার ডিভাইস’টি গাড়িতে ইনস্টলড করা থাকলে, গাড়ির চালক মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি স্টার্ট করতে গেলেই তা জানিয়ে দেবে এবং গাড়ি স্টার্ট হবে না। এমনকী গাড়ির ভিতরে অ্যালার্ম বাজিয়ে যাত্রীদের সতর্ক করে দেবে এই ডিভাইস। এ ছাড়াও চোখের পাতা কতবার পড়ছে তারও হিসাব কষে চালকের ঘুম আসছে কিনা বা চালক ঘুমিয়ে পড়েছে কিনা তাও স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানিয়ে দেবে প্রজ্ঞার আবিষ্কৃত ডিভাইস। তৎক্ষণাৎ অ্যালার্ম বাজিয়ে চালক ও যাত্রীদের সতর্ক করে দেবে এই যন্ত্র। গাড়ির চালক যদি হঠাৎ রাস্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তা-ও ফেস স্ক্যানার ডিভাইসটি ডিটেক্ট করে অ্যালার্ম বাজাবে ও যাত্রীদের জানান দেবে। প্রজ্ঞার এই গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইসটি তৈরি করতে খরচ পড়ে মাত্র ৩ হাজার টাকা। প্রসঙ্গত, মদ্যপ অবস্থায় বা চালকের ঘুমের কারণে প্রতিদিন বহু দুর্ঘটনা ঘটে। যার জেরে প্রাণহানির সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। ফলে প্রজ্ঞার আবিষ্কৃত এই ডিভাইস নিয়ে দেশে তো বটেই, বিদেশেও শুরু হয়ে গিয়েছে রীতিমতো চর্চা। ভূয়সী প্রশংসা করে বহু সংস্থা। সম্প্রতি ইউনিসেফ ও গুজরাট সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট যৌথভাবে প্রজ্ঞার দুর্ঘটনারোধক ডিভাইসটি গাড়িতে ইনস্টল করায় আগ্রহ দেখিয়েছে। এটি আবিষ্কারের ভাবনা দুর্গাপুরের মুচিপাড়ার মেয়ে প্রজ্ঞার মাধায় আসে বাবার সঙ্গে গাড়িতে লং ড্রাইভে গিয়ে। রাস্তায় তাদের গাড়ি আটকায় পুলিশ। চালকেরা মদ্যপ কিনা তা পরীক্ষার জন্য অ্যালকোহল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করছিল পুলিশ। দীর্ঘ সময় রাস্তায় আটকে পড়ে হয়রানির শিকার হন তাদের মতো বহু যাত্রী। এরপরই হয়রানির হাত থেকে বাঁচতে নতুন কিছু আবিষ্কারের জেদ চেপে বসে তার মনে। অনেক পরীক্ষানিরীক্ষার পর শেষ পর্যন্ত সফল হয় সে। মেয়ের আবিষ্কারে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত প্রজ্ঞার সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বাবা দেবাশিস বিশ্বাস ও শিক্ষিকা মা অঞ্জনা বিশ্বাস। সন্তানের এই আবিষ্কার বহু পরিবারকে প্রিয়জনের অসময়ে চলে যাওয়া আটকাতে সক্ষম হবে বলে আশা বিশ্বাস দম্পতির।