তিন দশক আগের ছবিটা মোটেই ধূসর হয়ে যায়নি। বরং ইডেনে রঞ্জি জয়ের স্মৃতি বঙ্গজীবনের গোপন কুঠুরিতে আজও সুরক্ষিত। সৈয়দ কিরমানির ছায়ায় ঢাকা পড়ে যাওয়া এক তরুণের উপেক্ষা ও বঞ্চনার যাবতীয় জবাব যেন ঝরে পড়েছিল ইডেনের সবুজ ঘাসে। ফের ট্রফি জয়ের হাতছানির সামনে স্মৃতি হাতড়ালেন সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sambaran Banerjee)।
অলোক সরকার
প্রশ্ন : ইডেনে আজ ঘণ্টা বাজিয়ে আপনিই (Sambaran Banerjee) ম্যাচ শুরু করবেন। বিশেষ কোনও অনুভূতি?
সম্বরণ : অবশ্যই। মন ফিরে যাচ্ছে ১৯৯০-এর ২৩ মার্চে। ওইদিনই ফাইনাল শুরু হয়েছিল সেবার। সবকিছু ছবির মতো সামনে চলে আসছে।
প্রশ্ন : ২০১১ বিশ্বকাপের আগে কাপিলদেব কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে এসে বলেছিলেন, কেউ তো পাশে এসে দাঁড়াও। এই একাকীত্ব আর সহ্য করতে পারছি না! আপনারও তো ৩৩ বছর হল?
সম্বরণ : দেখুন, গত কয়েক বছরে বাংলা খুব ভাল ক্রিকেট খেলেছে। প্রত্যেকবার মনে হয়েছে এবার রঞ্জি জিতব। হয়নি। ঘরের মাঠে মনোজ যদি ট্রফি জিততে পারে, আমার থেকে বেশি খুশি আর কেউ হবে না।
প্রশ্ন : কী মনে হচ্ছে এবার সত্যিই হবে?
সম্বরণ : মন তাই বলছে। বাস্তবও তাকেই সমর্থন করছে। আমি বলব, ঘরের মাঠে অ্যাডভান্টেজ বাংলা।
প্রশ্ন : আপনি শেষ রঞ্জি-জয়ী বঙ্গ অধিনায়ক। এই মুহূর্তে আবেগ ঘিরে ধরেছে আপনাকে। এটা সরিয়ে রেখে যদি মানোজদের সম্ভাব্য ট্রফি জয়ের কারণ ব্যাখ্যা করেন?
সম্বরণ : মোদ্দা কথা এটাই যে, বাংলা অসাধারণ ক্রিকেট খেলছে। সিনিয়র-জুনিয়র মিলে দলটা দারুণ দাঁড়িয়েছে। ব্যাটিং নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। অনুষ্টুপ, সুদীপ, অভিমন্যু, মনোজ রোজ রান করছে। এরসঙ্গে সেরা পেস অ্যাটাক। মাঝখানে অলরাউন্ডার শাহবাজ। সৌরাষ্ট্র বেশি ম্যাচ হোমে খেলেছে। এবার বাইরে। তাও এমন উইকেটে যেটা রিয়েল চ্যালেঞ্জ। তাহলেই বুঝুন। তবে এই উইকেটে টস একটা ফ্যাক্টর হবে।
প্রশ্ন : ইডেনে যে ম্যাচে দিল্লিকে হারিয়ে আপনারা ৩৩ বছর আগে রঞ্জি জিতেছিলেন, তাতে দুটো দলের দুই ইনিংসও কমপ্লিট হয়নি। দিল্লি আগে ব্যাট করে তুলেছিল ২৭৮ রান। জবাবে বাংলা ২১৬/৪। বৃষ্টির ম্যাচে কোশেন্টে ট্রফি জিতেছিলেন আপনারা। কী মনে হচ্ছে এবার অন্তত সরাসরি জিতুক বাংলা?
সম্বরণ : বৃষ্টি হলে আমরা কী করব? তবে ম্যাচে আমরাই এগিয়ে ছিলাম। পুরো খেলা হলে সরাসরি জিততাম।
প্রশ্ন : কিন্তু সেই কোশেন্ট নিয়ে প্রচুর বিতর্ক হয়েছে। পিচে জল ঢালারও অভিযোগ উঠেছিল। এতদিন পরে সেসব নিশ্চয়ই মনে আছে আপনার?
সম্বরণ : আছে। কিন্তু মাঠের নজরদারিতে দুজন আম্পায়ার পিলু রিপোর্টার ও আর এস রাঠোর ছিলেন। ওদের হাতেই ছিল ম্যাচের দায়িত্ব। আর কোশেন্ট বা রানের হিসাবে ট্রফির ফয়সালার সিদ্ধান্ত তো বোর্ডের। আমরা কী করব! সুতরাং এসব ছিল অহেতুক বিতর্ক।
প্রশ্ন : যাক গিয়ে, কী চাইবেন এবার মনোজদের স্ট্রেট জয়? যাতে বিতর্কের কাদা না থাকে?
সম্বরণ : আবার বলছি, ওটা ছিল অহেতুক বিতর্ক। যার দরকারই ছিল না। তবে হ্যাঁ, বাংলা সরাসরি জিতে ট্রফি পেলে আমি তো খুব খুশি হব।
আরও পড়ুন-মনোজের রেকর্ডের আশায় ক্রীড়ামন্ত্রী