মঙ্গলবার ২১ ফেব্রুয়ারি। সারা বিশ্বের পাশাপাশি শহর কলকাতাতেও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। এই দিনের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে একাধিক জানা-অজানা ইতিহাস। কিন্তু সেই ইতিহাসে রয়েছে আত্মত্যাগ, নিরলস সংগ্রাম এবং হার না মানা মনোভাব। সেই সব কিছু মিলিয়েই পালন করা হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর আকাদেমি সভাঘরে তিন দিন ব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেই অনুষ্ঠানেই এদিন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলা ভাষার গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন-মেডিকা হাসপাতাল চত্বরে আগুন, হতাহতের খবর নেই
এদিন শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে মাতৃভাষা প্রাসঙ্গিকতা। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষা স্মারকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য পরামর্শদাতা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ভাষা ও রাষ্ট্র-এই বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই আকাদেমি সভাঘরে বিদ্যাসাগর স্মারক বক্তৃতা দেন দুই বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।
আরও পড়ুন-‘আমরা ডাবল ইঞ্জিন ফ্লাইট চাই, সিঙ্গল ইঞ্জিন ফ্লাইটে ঝুঁকি আছে’ কোচবিহার থেকে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর
পাশাপাশি এদিন বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও বঙ্গভঙ্গের প্রভাব কীভাবে বিভিন্ন ভাষার ওপর প্রভাব ফেলে তা নিয়ে এদিনের আলোচনায় বক্তব্য রাখেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও বঙ্গভঙ্গের প্রভাব ও ইতিহাস নিয়ে মোট সাতটি অধ্যায় আলোচনা করেন তিনি। যেখানে বাংলা ভাষার প্রবর্তন এবং ধীরে ধীরে কীভাবে বিভিন্ন ভাষাকে সঙ্গী করে বাংলা ভাষা এত সমৃদ্ধ হয়ে উঠল তা নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করেন আলাপন। পাশাপাশি কীভাবে ধীরে ধীরে বাংলা ভাষা সপ্তদশ শতাব্দীতে আরও সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠল তা উঠে আসে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে। এছাড়া সংস্কৃত ও পার্সি ভাষার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবং তাদের একাত্ম করে কীভাবে বাংলার গৌরব বাড়ল তা উঠে আসে আলোচনায়। অন্যদিকে বিংশ শতকে কীভাবে বাংলা ভাষাকে ‘বঞ্চনা’ করা হয়েছিল সেই ইতিহাসও এদিন উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য পরামর্শদাতার বক্তব্যে।
আরও পড়ুন-‘বনধ করলে আমরা বনধ সমর্থন করব না’ দার্জিলিং থেকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির সভাঘরে ২১-২৩ ফেব্রুয়ারি ৩ দিন ব্যাপী ভাষা উৎসব উদযাপন হচ্ছে। প্রতিদিন বিকেল পাঁচটা থেকে থাকছে কবিতা পাঠ ও আলোচনামূলক অনুষ্ঠান। মঙ্গলবারই সেই অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হল।