প্রতিবেদন : একে একে সামনে আসছে সর্বহারার দল সিপিএমের কারনামা। চিরকুটে চাকরি থেকে হোলটাইমার যুবনেতার ২২ লাখি বিলাসবহুল গাড়ি৷ ৩৪ বছর ধরে নানা উপায়ে ক্যাডার প্রতিপালনের পর এখন সাধু-সজ্জনের ভূমিকায় নেমে রোজ সান্ধ্যকালীন টিভি-বিতর্কে অংশগ্রহণ করে বড় বড় ডায়লগ দেওয়া, মার্কস-লেনিন আওড়ানো কমরেডদের কালো দিক আর লুকোনো যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন-রুশ হামলার ছবি আঁকায় আটক নাবালিকা
একদিকে প্রকাশ্যে আসছে বেআইনি নিয়োগ নিয়ে রোজ গলার শিরা ফুলিয়ে বক্তব্য রাখা সুজন চক্রবর্তীর চাকরির সুপারিশ চিঠি, যেখানে পার্টি কমরেডের জন্য তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীকে সুপারিশ করে বলছেন, চাকরিটা যেন হয়। আবার একসময়ের ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা, বর্তমান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বাম আমলে কোটায় চাকরি বিলি নিয়ে তো হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন। একে একে আরও তালিকা দিচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় চাকরি বিলি নিয়ে পোস্ট করে বিঁধেছেন মহম্মদ সেলিমকেও। সব মিলিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে কাদা ছুঁড়তে গিয়ে সিপিএমই এখন ল্যাজেগোবরে। সর্বহারাদের যাবতীয় কারনামা এসে পড়ছে জনসমক্ষে।
আরও পড়ুন-ঘুষকাণ্ডে এবার গ্রেফতার কর্নাটকের বিজেপি বিধায়ক
এই মুহূর্তে সর্বহারার যুবনেতা, ভোটে হারার রেকর্ড গড়া শতরূপ ঘোষের ২২ লাখি গাড়ি নিয়ে সিপিএমের অন্দরমহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ মঙ্গলবার সকালে ট্যুইট করে গাড়ির নথি-সহ সব তথ্য প্রকাশ্যে এনে হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেন। সেই সঙ্গে একগুচ্ছ প্রশ্নও তুলেছেন কুণাল। তাঁর কথায়, যিনি পার্টির হোলটাইমার, তাঁকে তো ব্যাঙ্ক ঋণ দেওয়া যায় না। বাবা টাকা দিলে, বাবা তাঁর নামে গাড়ি কিনতে পারতেন। পরে সেই গাড়ি বাবার থেকে ছেলে পেতেন। আশা করি, বলবেন না স্ত্রী গাড়ি দিয়েছেন। তাহলে পণের উদাহরণ আসবে।
হোলটাইমারের গাড়ির দাম ২২ লাখ টাকা। সেটা দল জানে তো? এরপরই কুণালের তোপ, সর্বহারার দলের তরুণ নেতা ২২ লাখ টাকা দিয়ে গাড়ি কেনেন কী করে? তাঁর ২২ লাখের গাড়িতে চড়ার শখ হয় কী করে? যাঁরা বলবেন শ্রমিক শ্রেণির দল। তাঁর এত টাকার গাড়ি! যাঁর পরপর হারাটা রেকর্ড। এটাকে কি দল অ্যালাউ করবে?
আরও পড়ুন-অঙ্গনওয়াড়িতে এলপিজি
আমরা বনি সেনগুপ্তর গাড়ি চড়া নিয়ে মশকরা করি। তাহলে শতরূপের গাড়ি নিয়ে কেন প্রশ্ন উঠবে না? বনি তো তাও মাচা অনুষ্ঠান করে। এই নেতা আবার হাইব্রিড গাড়ি কিনেছেন। কারণ বাম-রাম। আসলে রাম-রেড।
এদিকে সাংসদ থাকাকালীন নিজের লেটারহেড ব্যবহার করে তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর আপ্তসহায়কের কাছে জেলার পার্টি কমরেডের চাকরির সুপারিশ চিঠিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। সেখানে জনৈক নিখিল পালের চাকরির সুপারিশ রয়েছে। এখন সেই সুজন চক্রবর্তী বেআইনি নিয়োগ-সুপারিশ নিয়ে বড় বড় কথা বলছেন! সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমকে অতীত মনে করিয়ে দিয়ে উদয়ন গুহ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘আজ সেলিমের জন্য, এরা সবাই ৩য় বিভাগে পাশ করে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি করেছেন। সনাতন সাহা, বিমল দাস, অঞ্জলি সেন, মলয় রায়, মলয় গুহনিয়োগী। পরপর আরও আসবে। সেলিম, আপনারা শুধু নিজের বাবার নয়, শিক্ষার বাবারও পিণ্ডি চটকেছেন”। এতসবের পর নিজেদের অসহায়ভাবে নির্দোষ-নিষ্কলঙ্ক বলা ছাড়া আর কীই-বা করার আছে কমরেড, আসলে রাম-রেডদের!