শান্তনু বেরা, দিঘা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প দিঘার জগন্নাথধাম। আগামী ৩ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী দিঘায় আসার আগে সেই মন্দির নির্মাণের কাজ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। গত বছর অক্ষয় তৃতীয়ার দিন নারকেল ফাটিয়ে দিঘা রেল স্টেশন লাগোয়া ভোগীব্রহ্মপুর মৌজায় এই জগন্নাথ মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা একাকার বিধায়ক অখিল গিরি। পুরীর মন্দিরের আদলে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির গড়ে তুলতে ইতিমধ্যে হিডকোর তত্ত্বাবধানে ২৫ একর জায়গা জুড়ে প্রকল্পের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে মন্দিরের নকশা ও রেপ্লিকাও চূড়ান্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছিল, ওল্ড দিঘার জগন্নাথঘাটের কাছে জগন্নাথমন্দির সংলগ্ন এলাকায় মন্দিরটি গড়ে তোলা হবে।
আরও পড়ুন-২৪ ঘণ্টার জন্য লাগবে না সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ফি, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের ভুটানে মিলবে ছাড়
কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় প্রকল্পটিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ভোগীব্রহ্মপুর মৌজায়। সেখানেই ২৫ একর জায়গা জুড়ে গড়ে উঠছে জগন্নাথদেবের অনিন্দ্যসুন্দর মন্দির। এই জগন্নাথমন্দির নির্মাণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত উৎসুক। তিনি নিজেই এই মন্দিরের জন্য ১২৮ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন। কয়েক মাস আগে কলকাতার নেতাজি ইনডোরে প্রশাসনিক বৈঠকেও এই মন্দির নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠক থেকেই সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের দ্রুত মন্দির নির্মাণের জন্য নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। এমনকী মন্দির নির্মাণ শেষ হলে, নিজে সেই মন্দিরে প্রথম পুজো দেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন। তাই যে জগন্নাথ মন্দির সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর এত আবেগ, এবার দিঘা সফরে এসে সেই মন্দির নির্মাণ পর্যবেক্ষণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী একবার আসতে পারেন এমনটা ধরে নিয়েছেন মন্দির প্রস্তুতকারীরা। সেই মতো এখন সাজ-সাজ রব মন্দির নির্মাণ এলাকায়।
আরও পড়ুন-রাজ্যের উন্নয়ন ও বিকাশ সওয়ার হবে নতুন পথে, বঞ্চনা সত্ত্বেও মেদিনীপুর পথ-যোগে পথ দেখাবে
কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওড়িশার পুরীর জগন্নাথ মন্দির দর্শন ও পুজো দিয়ে এসেছেন। দিঘার জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের কাজও অনেকটা হয়ে গিয়েছে। তা দেখে মুখ্যমন্ত্রী কী বলেন, অথবা কী কী পরামর্শ দেন, সেই দিকেই নির্মাণকারীদের মতো দিঘার স্থানীয় বাসিন্দারা এবং জগন্নাথ ভক্তরা তাকিয়ে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার রামনবমী উপলক্ষে হিন্দুত্বের জিগির তুলে বিজেপি রাজ্যের বহু জায়গায় রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছে। এই হিন্দুত্ব ইস্যুতে বিজেপিকে কড়া জবাব দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তারই অংশ হিসেবে বিভিন্ন মন্দির সংস্কার, ধর্মীয় পর্যটন সার্কিট গড়ে তোলা-সহ একাধিক কাজে হাত দিয়েছেন তিনি।