প্রতিবেদন : কলকাতা হাইকোর্টে নিয়োগ প্রক্রিয়ার গরমিল নিয়ে তদন্ত চলছে। সেই তদন্তকে কেন্দ্র করেই কখনও চরম বিতর্ক, কখনও সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ছে কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার যেমন নিয়োগ মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় শুনানিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জড়িয়ে যে মন্তব্য করেছেন তাতে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস এই মন্তব্যের প্রতিবাদ করেছে। যদিও ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগেই সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগ মামলা নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছেন বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু ও বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ।
আরও পড়ুন-কংগ্রেসের অবস্থানে বিধায়ক গরহাজির
সেখানে সরাসরি নিয়োগ মামলার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তোলা হয়েছে। বিচারপতি বসু বলেন, নিয়োগ মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট সচেতন। কিন্তু এই মামলায় হাইকোর্টের প্রক্রিয়াগত ত্রুটি নিয়েও আমরা উদ্বিগ্ন। এখানে চাকরি খারিজ করার আগে চাকরিরতদের বক্তব্য শোনা হয়নি। অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি স্পষ্ট ভাষায় যেটা বলেছেন তা হল, নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তগুলিতে প্রক্রিয়াগত ত্রুটি রয়েছে। কলমের খোঁচায় চাকরি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে বারেবারে। কিন্তু যাঁদের চাকরি খারিজ করা হয়েছে তাঁদের বক্তব্য শোনা উচিত ছিল, তা পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন-আয়ারল্যান্ডের আলোয় সাজল ধনধান্য স্টেডিয়াম
যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন তাঁদের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী মুকুল রোহতগী ও আইনজীবী পি এস পাটওয়ালিয়া। তাঁরা শুধু চাকরি খারিজের পদ্ধতিতে হতবাক হয়েছেন তাই নয়, কোন কারণে সিবিআই নির্দেশ দেওয়া হল সে নিয়েও হতবাক। যার বিরুদ্ধে কার্যত কোনও মন্তব্যই করতে পারেননি মামলাকারীদের আইনজীবী। তৃণমূল কংগ্রেসের পরিষ্কার বক্তব্য, হাইকোর্টে একটা প্রবণতা তৈরি হয়েছে যে সবকিছুতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া। একাধিক ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট সেই রায় খারিজও করছে। তাই বিষয়টি কোর্টের ভেবে দেখা উচিত। তৃণমূল যখন এই বক্তব্য রাখছে ঠিক তখনই বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর এই মন্তব্য। শুধু নিয়োগ মামলা নয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কনভয়ে হামলার মামলায় সিবিআইয়ের দাবি খারিজ করে হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং মন্তব্য করা হয়েছে, পুলিশ রিপোর্ট হয়তো পুরোটা দেখাই হয়নি।
আরও পড়ুন-প্রেসিডেন্সিতে গেলেন রাজ্যপাল
তৃণমূলের স্পষ্ট বক্তব্য, নিয়োগ মামলায় যদি কোথাও অনিয়ম হয়ে থাকে ব্যবস্থা নিক আদালত। কিন্তু কোথাও কি পক্ষপাতদুষ্টতার ছায়া দেখা যাচ্ছে? বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর মন্তব্য কার্যত সেই বক্তব্যকেই সমর্থন করেছে।