প্রতিবেদন : ডিএ আদায়ের দাবিতে আন্দোলনের নামে চলছে আর্থিক তছরুপ-হুমকি-মারধর এবং রাজনীতি। এক কথায় আন্দোলনের মঞ্চ হয়ে উঠেছে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জায়গা। সেখানে চলছে একনায়কতন্ত্র। এই বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছে ডিএ আন্দোলনকারীদের (DA-Agitation) যৌথ মঞ্চের অন্যতম শরিক ‘ইউনিটি ফোরাম’। এমনকী আর্থিক তছরুপের অভিযোগে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘ইউনিটি ফোরাম’। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের বিরুদ্ধে গুরুতর এই অভিযোগ তুলেছেন ইউনিটি ফোরামের আহ্বায়ক দেবপ্রসাদ হালদার। তাঁকে খুনের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর৷ যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের ভাস্কর ঘোষ ও শৈবাল সরকারকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তিনি। তাঁর চিঠিকেই এফআইআর হিসেবে ধার্য করার আর্জি জানিয়েছেন দেবপ্রসাদ। এই মর্মে চিঠি পাঠিয়েছেন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি-আইজি, ডিআইজি সিআইডি, কলকাতার পুলিশ কমিশনার, কমান্ডান্ট-ইন্ডিয়ান আর্মি এবং আইসি ময়দান থানাকে। ভাস্কর ও শৈবাল ছাড়াও সন্দীপ ঘোষ, চন্দন চট্টোপাধ্যায়, নির্ঝর কুন্ডু, রাজীব দত্ত, ইন্দ্রজিৎ মন্ডল-সহ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আরও কয়েজনের বিরুদ্ধে ফান্ড তছরুপ ও অন্যান্য বেআইনি কাজে যুক্ত থাকার মতো গুরুতর অভিযোগ করেছেন দেবপ্রসাদ হালদার।
দেবপ্রসাদ হালদারের বক্তব্য, যৌথ মঞ্চে এখন একনায়কতন্ত্র চলছে। সরকারি কর্মচারীরা টাকা দিয়েছে ডিএ পাওয়ার জন্য। এর দুটি পন্থা— রাস্তায় নেমে আন্দোলন (DA-Agitation) এবং সুপ্রিম কোর্টে লড়াই করা। সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার দিকে সকলেই তাকিয়ে রয়েছে। কারণ সেখানে কোনও সিদ্ধান্ত না হলে সরকার ডিএ নিয়ে উদ্যোগী হবে না। ফলে গত ৮০-৮৫ দিন ধরে যে আন্দোলন চলছে তা পণ্ডশ্রমের শামিল। শুধু তা-ই নয়, আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তোলায় দেবপ্রসাদ হালদারকে মারধর ও খুনের হুমকি দেন ভাস্কর ঘোষ (কনভেনার) ও শৈবাল সরকার (ট্রেজারার)। এই ঘটনায় রাজ্য পুলিশের শীর্ষকর্তাদের ও ময়দান থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ফোরামের দেবপ্রসাদ হালদার বলেন, তছরুপের প্রতিবাদ করতেই আহ্বায়ক পদ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ফোরাম আহ্বায়কের দাবি, ধীরে ধীরে যৌথ মঞ্চ থেকে আরও অনেক সংগঠন বেরিয়ে আসবে। আবার কারও দাবি, যৌথ মঞ্চ আসলে ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠ’। সবমিলিয়ে নিজেদের ভিতরকার চুরি-জোচ্চুরি-অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে এবার টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হল যৌথমঞ্চের তথাকথিত আন্দোলনে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণবঙ্গে জেলায় ফিরল স্বস্তি, আপাতত বিদায় তাপপ্রবাহের
শুক্রবার তাঁরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসলেও কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি। বৈঠক থেকে বেরিয়ে মুখ্যসচিব ও অন্যান্য অফিসারদের সম্পর্কে কুরুচির মন্তব্য করেন। এ-বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, এঁরা তথাকথিত আন্দোলনকারী সরকারি কর্মী। যে-ভাষায় সরকারি অফিসারদের সম্পর্কে কথা বলছেন তা গ্রহণযোগ্য নয়। এঁরা নিজেদের সরকারি কর্মী বলে দাবি করেন! এর তীব্র নিন্দা করছি। এঁরা রাজনীতি করছেন। সরকার সদর্থক মনোভাব নিয়ে আলোচনায় বসলেও এঁরা তা চান না। এঁরা বিজেপির পরামর্শে চলছেন। দিল্লিতে গিয়ে হিন্দু মহাসভার অতিথি শালায় থাকছেন। এঁরা যা করছেন তা ন্যক্কারজনক।