প্রতিবেদন : ভয়াবহ তাপপ্রবাহের জেরে ২০২২ সালে ইউরোপে মৃত্যু হয়েছে ১৫৭০০ মানুষের। যার মধ্যে স্পেনে ৪৬০০ জন, জার্মানিতে ৪৫০০ জন, ব্রিটেনে ২৮০০ জন, ফ্রান্সে ২৮০০ জন, পর্তুগালে ১০০০ জন অস্বাভাবিক গরমে প্রাণ হারিয়েছেন। টানা তিনমাস প্রবল গরমে পুড়েছে ইউরোপ মহাদেশ। এই ভয়াবহ রিপোর্ট সামনে আসতেই ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।
আরও পড়ুন-সুদানে বেড়েই চলেছে মৃত্যু মিছিল, ভুগছে প্রবল খাদ্য সংকটে, শুরু অপারেশন কাবেরী
বিশ্বজুড়ে তাপপ্রবাহের মূল কারণ বিশ্ব উষ্ণায়ন। বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরেই বিশ্বে উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে খরা, বন্যা ও তাপপ্রবাহের মতো ঘটনা। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন ২০২২ সালের তাপপ্রবাহ নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ওই রিপোর্ট থেকে ইউরোপ সম্পর্কে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন রাষ্ট্রসংঘের অধীনস্থ একটি সংস্থা।
আরও পড়ুন-এয়ার ইন্ডিয়াকে জরিমানা, যাত্রীকে হেনস্তা
প্রকাশিত রিপোর্টে তাপপ্রবাহের পাশাপাশি বিশ্ব উষ্ণায়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যও উঠে এসেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন এবং নাইট্রাস অক্সাইড এই তিন গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন ক্রমশই বেড়ে চলেছে। ভারতও তাপপ্রবাহের কবল থেকে পিছিয়ে নেই। বর্ষার সময়েও ভারতে মাত্রাছাড়া গরম। একইসঙ্গে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় কৃষিকাজের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ২০২২ সালে গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ হয়েছিল। ১৮৫০-১৯০০ এই সময়কালের থেকে তাপমাত্রা ১.১৫ ডিগ্রি বেড়ে গিয়েছে।
ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের সেক্রেটারি জেনারেল পেট্টেরি তালাস জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে ব্যাপক হারে বাড়ছে জনসংখ্যা। ক্রমবর্ধমান গ্রিনহাউস গ্যাস পরিবেশে ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলছে। খরা, বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় খুবই অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। পূর্ব আফ্রিকায় যখন ধারাবাহিকভাবে খরা চলছে তখন পাকিস্তানের মতো দেশে ভয়াবহ বন্যা হচ্ছে। পরিবেশের এমন পরিবর্তন খাদ্য নিরাপত্তাকেও প্রশ্নে মুখে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। এসবের ফলে বাড়ছে উদ্বাস্তু সমস্যা।
আরও পড়ুন-নারীরাই উচ্ছেদ করবে বিজেপিকে
শুধু পাকিস্তান নয়, ভারতের একাংশও গত বছর ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হয়েছে। জুন মাসে ব্যাপক বন্যা হয়েছিল উত্তর-পূর্ব ভারতে। ধস নামে পাহাড়ে। বন্যা ও ধসে ৭০০-রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল ভারতে। বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছিল আরও ৯০০ জনের। অন্যদিকে, পুরনো রেকর্ড ভেঙে ২০২২ সালে ভয়াবহ ও দীর্ঘতম তাপপ্রবাহের সাক্ষী হয়েছিল চিন। জুনের মাঝামাঝি থেকে অগাস্ট মাস পর্যন্ত সেদেশে তাপপ্রবাহ চলেছিল।