প্রতিবেদন : দেশের মানুষ ঠিকমতো খেতে পাচ্ছে না। তাদের দরকার রোটি-কাপড়া-মকান আর প্রধানমন্ত্রী ১৫০০ কোটি টাকার নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করছেন। দেশের মানুষের কোন কাজে লাগবে এই নতুন ভবন? পুরনো ভবনে তো কোনও অসুবিধে হচ্ছিল না! ৮০০ সাংসদ বসবেন তার জন্য ১৫০০ কোটি টাকা! সেন্ট্রাল ভিস্তার জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা, নিজের জন্য ৮ হাজার কোটির বিমান কিনছেন— এদিকে দেশের বেশিরভাগ মানুষ চরম আর্থিক কষ্টে রয়েছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। আর মোদিজি সাধু-সন্তদের নিয়ে গিয়ে সংসদ ভবনের উদ্বোধন করছেন। কেন? বোঝাই যাচ্ছে আগামী দিনে ধর্মের দোহাই দিয়েই দেশ চালাতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। সংসদ ভবনের উদ্বোধন হচ্ছে অথচ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি! কেন, তিনি আদিবাসী জনজাতির বলে? ঠিক এই কড়া ভাষাতেই প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শালবনি থেকে বেরিয়ে জনসংযোগের মাঝে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে গত ৯ বছরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যকলাপ নিয়ে তুলোধোনা করেন তিনি। তাঁর একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
রাষ্ট্রপতি আমন্ত্রিত নন : রাষ্ট্রপতি একজন আদিবাসী মহিলা। তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হল না! তীব্র কটাক্ষ করে অভিষেক (Abhishek Banerjee) বলেন, সাংসদ-মন্ত্রীরা নয়, নতুন ভবন উদ্বোধনে সাধু-সন্তরা উপস্থিত! এটা একটা টিজার— কোন দিকে দেশকে নিয়ে যেতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি গণতন্ত্র নয়, একনায়কতন্ত্র চালাতে চাইছেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণ দিয়ে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। অথচ তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি! বলেন, রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ না জানানো প্রমাণ করে প্রধানমন্ত্রী আদিবাসী ও মহিলাদের সম্মান করেন না।
সোনার মেয়েদের হেনস্থা : মোদিকে তুলোধনা করে অভিষেক বলেন, প্রধানমন্ত্রী বেটি বাঁচাও-এর কথা বলেন, অথচ যেখানে সংসদ ভবন উদ্বোধন হচ্ছে, তার থেকে অল্প দূরেই সাক্ষী মালিক-সহ ভারতীয় পদকজয়ী মহিলা কুস্তিগিরদের টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। নরেন্দ্র মোদিকে রোমের রাজা নিরোর সঙ্গে তুলনা করে তীব্র কটাক্ষ করেন অভিষেক। বলেন, রোম জ্বলছে আর উনি গান গাইছেন আর নিজের মতো আনন্দ উপভোগ করছেন।
সব বদলে দিচ্ছে : অভিষেকের কটাক্ষ, প্রধানমন্ত্রী বোধহয় পাল্টানোর রাজনীতিতে বেশি বিশ্বাস করেন। কিন্তু সংসদ ভবন না পাল্টে প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টালে দেশের উপকার হত। ২০২৪-এ দেশের মানুষই মোদিকে পাল্টে দেবেন।
সংসদে মাইক বন্ধ : এত কোটি টাকা ব্যয়ে সংসদভবন নির্মাণ করার কী দরকার ছিল! সেখানে সাংসদদের বলতেই দেওয়া হয় না। মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী থাকার জায়গা তৈরি হচ্ছে বহু কোটি টাকা ব্যয়ে। আর গ্যাস-পেট্রোলের আকাশছোঁয়া দাম। দেশের সাধারণ মানুষের মাথায় ছাদ নেই। বাংলায় প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনার টাকা দেওয়া হয় না।
রাষ্ট্রপতি ভবন প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে : রাষ্ট্রপতি ভবনে ভিজিটর লিস্ট তৈরি হয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে। কে যাবেন কে যাবেন না তা উনি ঠিক করেন। রাষ্ট্রপতির স্বাধীন ভাবে কাজ করার কোনও ক্ষমতাই নেই। তোপ অভিষেকের।
দেশের ঋণ অনেক : বিজেপি কথায় কথায় বাংলার ঋণের কথা বলে। অথচ গত ৯ বছরে মোদি সরকার ১০০ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। ১৯৪৭ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত যা ছিল ৫৫ লক্ষ কোটি টাকা। তবেই ভাবুন বিজেপির কাজের বহর। এরাই আবার গায়ের জোরে বাংলার টাকা আটকে রেখেছে। যত চোর-তোলাবাজদের বড় পদ দিয়েছে। আর মুখে বলছে না খাউঙ্গা না খানে দুঙ্গা।
আরও পড়ুন- সোনার মেয়েদের উপর তাণ্ডব দিল্লি পুলিশের, ধিক্কার গোটা দেশ জুড়ে