সংবাদদাতা, কাটোয়া : পরোপকার ছিল নেশা। অকালমৃত্যুর পরেও সেই ধারা বজায় রইল। আচমকা অসুখে মাত্র ২৭ বছর বয়সে মৃত্যু হয় পূর্বস্থলীর বৈদিকপাড়ার যুবক সৌমেন ভদ্রের। মৃত্যুর পর তাঁর নানান অঙ্গ কয়েকজনের শরীরে প্রতিস্থাপিত হওয়ার মাধ্যমে বজায় রইল পরোপকারী সত্তা। অতলান্ত শোকের মাঝে সৌমেনের পরিবার এইটুকুই সান্ত্বনা। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সৌমেনের ‘ব্রেন ডেথের’ পর পরিবারের সদস্যদের সম্মতিতে তাঁর হৃৎপিণ্ড, কিডনি ও যকৃৎ তিনজন রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপিত করা হয়।
আরও পড়ুন-সাগরদিঘিতে সংবর্ধনা বৃহস্পতিবার বায়রনকে নিয়ে উচ্ছ্বাস
তারপর পূর্বস্থলীর বাড়িতে এনে নবদ্বীপ শ্মশানঘাটে শেষকৃত্য হয় সৌমেনের। মা ইতি ভদ্র বললেন, আমার ছেলের অঙ্গে অন্যরা বাঁচবে। এর থেকে বড় তো আর কিছু হতে পারে না। ইতিদেবীর ইচ্ছে যাঁদের শরীরে প্রতিস্থাপিত হয়েছে, তাঁদের সঙ্গে দেখা করে ছেলের অভাব খানিকটা মেটানো। সৌমেনের মৃত্যুর পর কলকাতা পুলিশের সহায়তায় গ্রিন করিডরের মাধ্যমে তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কলকাতার তিনটি হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। পূর্বস্থলী নীলমণি ইনস্টিটিউশনের মেধাবী ছাত্র ছিলেন সৌমেন।
আরও পড়ুন-কৃষকদের বিমার টাকা মিলবে শীঘ্রই
পূর্বস্থলীর বৈদিকপাড়ার বাসিন্দা সদানন্দ ভদ্রের দুই ছেলের মধ্যে সৌমেনই বড়। বছর পাঁচেক আগে কাটোয়ার এক বেসরকারি ব্যাঙ্কে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার পদে যোগ দেন। পারুলিয়ার অঞ্জনা ভদ্রের সঙ্গে বিয়ে হয়। ওঁদের একটি পুত্রসন্তানও রয়েছে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে প্রচণ্ড মাথার যন্ত্রণা হতে থাকে। প্রথমে পূর্বস্থলী স্বাস্থ্যকেন্দ্র, তারপর কালনা মহকুমা হাসপাতাল হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যু হয় সৌমেনের।