প্রতিবেদন : মানবিকতার নজির রেখে রেল দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে আবারও ওড়িশা গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে দুর্ঘটনার পরদিন সকলের আগে তিনিই বালেশ্বর ছুটে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার তিনি কথা বলেন কটকের হাসপাতালে ভর্তি থাকা বাংলার মানুষদের সঙ্গে। বললেন, ভয় নেই পাশে আছি। কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানালেন হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স ও অন্যদের। একইসঙ্গে রেল দুর্ঘটনায় সিবিআই তদন্ত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া, আমি চাই তদন্তে আসল সত্যিটা বেরিয়ে আসুক। সত্য যেন ধামা চাপা না পড়ে। কটক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলে যান মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও রেল দুর্ঘটনায় ভর্তি আহতদের সঙ্গে দেখা করেন।
আরও পড়ুন-হিংসার আগুনে জ্বলছে মণিপুর, শহিদ ১ জওয়ান
আজ বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মৃত ও আহতদের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেবেন। জেলাশাসকদের পাঠানো তালিকার ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ প্রাপকদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা হয়েছে। দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ ক্ষতিপূরণ প্রাপকের তালিকায় রয়েছেন। ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা রবিবারই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিব জেলাশাসকদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা চেয়ে পাঠান তিনি। তারই ভিত্তিতে আজ চেক তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-যাত্রী সুরক্ষার গাফিলতি ঢাকতেই কি অন্তর্ঘাত তত্ত্ব? ডিআরএম-এর বক্তব্যে বাড়ল বিতর্ক, নিখোঁজ বহু
মঙ্গলবার দুপুর ২.৩০টায় কটক হাসপাতালে পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, জেলা পুলিশের আধিকারিক, জেলাশাসক সহ হাসপাতালের চিকিৎসকরা স্বাগত জানান তাঁকে। এরপর ওই হাসপাতালে ভর্তি বাংলার ৫১ জন আহতের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শোনেন। তাঁদের চিকিৎসার ব্যাপারে হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গেও কথা বলেন। বলেন, একটু সুস্থ হলে যাঁরা ফিরতে পারবেন তাঁদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনা হবে। রাজ্য সরকারের তরফে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। আহতদের সঙ্গে দেখা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আপনাদের চিন্তা করার কোনও কারণ নেই। এখানে বাংলার অফিসাররা রয়েছেন। পুলিশ ক্যাম্পও করা হয়েছে।
এদিন ওই একই সময়ে রাজ্যের দুই মন্ত্রী শশী পাঁজা ও চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ভুবনেশ্বর এইমসে যান। সেখানে রেল দুর্ঘটনায় নিহত বাংলার মানুষদের দেহ রয়েছে। সেই দেহ নিতে পরিজনরা গেলে যাতে কোনও অসুবিধে না হয় তার জন্য এইমস কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
আরও পড়ুন-ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া রোধে কড়া রাজ্য, পুরসভাকে দিতে হবে সাপ্তাহিক রিপোর্ট, ১৫ দিনে বাড়িতে ভিজিট
এদিন কটক হাসপাতালে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলার ১০৩টি দেহ শনাক্ত করা গিয়েছে। এছাড়া বাংলার ৯৭ জন ওড়িশায় চিকিৎসাধীন, ৩১ জন এখনও নিখোঁজ বলে জানতে পারছি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ওড়িশায় ৪০ জন বাংলার অফিসার আছেন। তাঁরা দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য করছেন। এছাড়া ১০০টি অ্যাম্বুল্যান্স পাঠানো হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এখানকার উদ্ধারকারী, চিকিৎসক, নার্স সকলকেই ধন্যবাদ জানাই। একযোগে কাজ করছে বাংলা ও ওড়িশা সরকার।