যাত্রী সুরক্ষার গাফিলতি ঢাকতেই কি অন্তর্ঘাত তত্ত্ব? ডিআরএম-এর বক্তব্যে বাড়ল বিতর্ক, নিখোঁজ বহু

তদন্ত চলাকালীন অন্তর্ঘাতের কথা বলে ডিআরএম যেভাবে উপসংহার টানলেন, তাতে তদন্তের প্রক্রিয়া কত দূর সঠিকভাবে এগোবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে

Must read

প্রতিবেদন : যাত্রী সুরক্ষার গাফিলতি ঢাকতেই কি রেল অন্তর্ঘাত তত্ত্ব সামনে আনছে, এই প্রশ্নটাই ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। বালেশ্বরের রেল দুর্ঘটনার পর তৃণমূল কংগ্রেস-সহ প্রায় সমস্ত বিরোধী দল অভিযোগ করেছিল, যাত্রী সুরক্ষা সংক্রান্ত চরম গাফিলতির কারণে এই দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে রেলমন্ত্রী বলেছিলেন, এই দুর্ঘটনার পিছনে কারা আছে সেটা তাঁরা চিহ্নিত করেছেন। ওই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই রেলমন্ত্রী আবার বালেশ্বরের দুর্ঘটনার দায়িত্ব সিবিআই-এর হাতে তুলে দেন।

আরও পড়ুন-ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া রোধে কড়া রাজ্য, পুরসভাকে দিতে হবে সাপ্তাহিক রিপোর্ট, ১৫ দিনে বাড়িতে ভিজিট

তদন্তের দায়ভার সিবিআইকে দেওয়ার পরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দিতেই এই কৌশল। সকলেই বুঝতে পারছেন, রেলের গাফিলতির কারণেই এই দুর্ঘটনা তাই মানুষের মুখ বন্ধ রাখার কৌশল হিসেবেই সিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। আসলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়ে সময় কিনতে চাইছে মোদি সরকার। এই দুর্ঘটনার পিছনে কারা দায়ী রেলমন্ত্রী যদি সেটা চিহ্নিত করে থাকেন তাহলে আবার সিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া কেন? সিবিআই আর সেখানে কী করবে? বোঝাই যাচ্ছে এটা দায়িত্ব এড়ানোর এবং মানুষে নজর ঘোরানোর কৌশল। বাস্তব অভিজ্ঞতাও একই কথা বলছে। ২০১৬ সালে কানপুরে ট্রেন বেলাইন হয়েছিল। পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের কুনুরুতেও একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। ওই দুই দুর্ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এনআইএ-কে। দু’টি ক্ষেত্রেই এখনও এনআইএর তদন্ত রিপোর্ট সামনে আসেনি।

আরও পড়ুন-পন্টিংয়ের দল আমার কাছে সেরা: সৌরভ

শুধু তাই নয়, কানপুর দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ২০১৮ সালে এনআইএ তদন্ত বন্ধ করে দেয়। এমনকী, চার্জশিট দিতেও অস্বীকার করে। তাই সিবিআই এক্ষেত্রে তদন্তে কতটা সফল হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সর্বোপরি তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই তার উপসংহার টেনে দিয়েছেন খুরদার ডিভিশনাল রেলওয়ের ম্যানেজার রিঙ্কেশ রায়। ডিআরএম বলেছেন, এই দুর্ঘটনার পিছনে অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই ডিআরএম-এর এ ধরনের মন্তব্য একাধিক প্রশ্ন তৈরি করেছে। সকলেই বলছেন, তদন্ত শেষ হওয়ার আগে কীভাবে অন্তর্ঘাতের কথা বুঝতে পারলেন ডিআরএম? তদন্তকে প্রভাবিত করতেই কি তিনি অন্তর্ঘাতের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন?

আরও পড়ুন-ব্রিজভূষণের বাড়ির লোকের বয়ান রেকর্ড

তদন্ত চলাকালীন অন্তর্ঘাতের কথা বলে ডিআরএম যেভাবে উপসংহার টানলেন, তাতে তদন্তের প্রক্রিয়া কত দূর সঠিকভাবে এগোবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে রেলমন্ত্রী, রেলের সুরক্ষা কমিশনার ও ডিআরএম কারও কথার মধ্যেই কোনও তালমিল থাকছে না। রেলমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, দোষীদের তাঁরা চিহ্নিত করতে পেরেছেন। অন্যদিকে রেলের সেফটি কমিশনার এ এম চৌধুরী বলেছেন, তদন্ত শেষ করতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। আবার তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই ডিআরএম জানালেন অন্তর্ঘাতের কারণেই এই দুর্ঘটনা।

Latest article