প্রতিবেদন : করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express accident) দুর্ঘটনায় মৃতদের দেহ পাওয়া নিয়ে এক অদ্ভুত জটিলতা তৈরি হয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করছেন, তাঁদের প্রিয়জনদের দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে অন্য কারও হাতে। একই মৃতদেহের দাবিদারও অনেক। এই অবস্থায় আত্মীয়-পরিজনরাও দিশাহারা। কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা।
গোরাচাঁদ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে বাংলার এক ব্যক্তি এখনও দাঁড়িয়ে আছেন ভুবনেশ্বর এইমসের মর্গের সামনে। তাঁর মতোই আরও অনেকে দুর্ঘটনার পর পাঁচ দিন কেটে গেলেও এখনও প্রিয়জনের দেহটি তাঁরা কেউই হাতে পাননি। গোরাচাঁদ ট্রেন দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন ছেলেকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার প্রবল অভিযাতে মৃতদেহগুলি সম্পূর্ণ থেঁতলে গিয়েছে। তার ওপর রেলের তরফে দেহ সংরক্ষণ করার উপযুক্ত ব্যবস্থা না করায় প্রবল গরমে সেগুলিতে পচন ধরেছে। ঠিকমতো শনাক্ত না হওয়ায় একজনের দেহ চলে যাচ্ছে অন্যদের হাতে। এ ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়াতে নিয়ম মেনে ডিএনএ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাতেই লাগছে দীর্ঘ সময়। স্বজন হারানোর বেদনা চেপে মর্গের সামনে নিকটাত্মীয়দের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা গোরাচাঁদ ছেলে শুভাশিসের দেহ নিতে এসেছেন। সোমবার থেকে এইমসের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন প্রৌঢ়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডিএনএ পরীক্ষার ফল মিললেই দেহ দেওয়া হবে। এখন ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন গোরাচাঁদ। মর্গের সামনেই দাঁড়িয়ে শেখ আবদুল গনি। দুর্ঘটনায় বড় ছেলেকে হারিয়েছেন তিনি। ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ভুবনেশ্বর এসেছেন বড় ছেলের দেহ নিতে (Coromandel Express Accident)। আবদুল জানিয়েছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, বিহারের কেউ তাঁর ছেলের দেহ নিয়ে চলে গিয়েছে। তাই তিনি তাঁর ছেলের দেহ পাচ্ছেন না। একই পরিস্থিতি জাকারিয়া লস্করেরও। কাকা আবু বকর লস্করের দেহ নিতে ভুবনেশ্বর এসে শুনছেন, মালদহের এক মহিলা তা নিয়ে চলে গিয়েছেন। এই ডামাডোল এড়াতে এখন ডিএনএ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হয়েছে৷ কিন্তু তাতে সময় লাগছে আরও বেশি। ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে স্বজনহারাদের।
আরও পড়ুন: নতুন সংসদ ভবনে অখণ্ড ভারতের ম্যুরাল কেন? ক্ষোভ জানিয়ে প্রতিবাদ প্রতিবেশীদের