রাজনৈতিক আঙিনায় উত্তাল উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগর (Thakurnagar)। আজ রবিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে গিয়েছেন। ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচিতেই সেখানে গিয়েছেন তিনি। রবিবার সকাল থেকেই বিক্ষোভ চলছে ঠাকুরনগরে। সেই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। মতুয়া সম্প্রদায়ের বিজেপি বিধায়করাও রয়েছেন।
আরও পড়ুন-বাহানাগা বাজার স্টেশনের দুর্ঘটনার জেরে এখনও বাতিল একাধিক ট্রেন
আজ রবিবার সাড়ে তিনটের পর ঠাকুরবাড়িতে পৌঁছেছেন অভিষেক। এদিন ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার জন্য শান্তনুকে নিশানা করে অভিষেক বলেছেন, ‘আমি আজ এসেছি পুজো দিতে। এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকে দিয়ে মহিলাদের উপর আক্রমণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই চার জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তুমি আমার সঙ্গে লড়াই করতে পারছ না, মহিলাদের আক্রমণ করছ। আগামী দিন যাঁরা ধর্মকে সামনে রেখে রাজনীতি করছে, তাদের পতন অবধারিত। আমি শান্তনু ঠাকুরকে চ্যালেঞ্জ করছি, এখানে এসে বলুন কোন রাস্তা, কোন কল বাকি রয়েছে। আমি নিজের করে দেব। আমি ধর্মকে সামনে রেখে রাজনীতি করছেন। আপনি ধর্ম আপনার বাড়িতে করুন। ঠাকুরবাড়ি আপনার পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। বড়মা বীণাপানি দেবী যতদিন বেঁচেছিলেন, তিনি যখন অসুস্থ সব ব্যবস্থা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছে। আমার কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি এখানে ছিল না। আমি পুজো দিতে এসেছি। উনি বলেছেন, আমি চলে যাওয়ার পর ঠাকুরবাড়ি গোবর জল দিয়ে ধোব। আমি তিন মাস অন্তর আসব। তুমি পরিষ্কার করো। আমি আবার আসব। তোমার দম থাকলে আটকিও।’
আরও পড়ুন-ক্যানসারে প্রয়াত ‘জুনুন’ খ্যাত অভিনেতা মঙ্গল ধিলোঁ
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর ও বিজেপিকে নিশানা করে অভিষেক বলেন, ‘শান্তনু ঠাকুর যেখানে থাকেন সেখানে জলের ব্যবস্থা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছে। যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে তৃণমূলকে ধমকাচ্ছে, চমকাচ্ছে, বিক্ষোভ করছে সেটাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা। কেউ যদি ভাবে গুরুচাঁদ ঠাকুর ও হরিচাঁদ ঠাকুরের আন্দোলনকে সরিয়ে দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করব। তাঁকে বলব, এই ঠাকুরবাড়ি তাঁর পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। মানুষের আবেগের, শ্রদ্ধার, প্রার্থনার জায়গা এই ঠাকুরবাড়ি। আমরা চাইলে ভেঙে দিয়ে ঢুকে যেতে পারব। কিন্তু আমরা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দেওয়ার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না।’
আরও পড়ুন-চেন্নাইগামী ইন্ডিগো বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি, মাঝ আকাশ থেকে ফিরল দিল্লি
অভিষেক এদিন বলেন, ‘গুরুচাঁদ ঠাকুর, হরিচাঁদ ঠাকুরের লড়াই শিক্ষাকে হাতিয়ার করে সমাজের মধ্যে জাগরণ তৈরির চেষ্টা। যে অধ্যাবসায়, যে সংযম তাঁরা দেখিয়েছেন তা আজ কলুষিত করল শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর গুণ্ডাবাহিনী। মানুষ যাতে এর জবাব দেয় সেই দায়িত্ব আমি মানুষকে দিয়ে যাব।ঠাকুরবাড়িতে এসে পুজো দিয়েছি। হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের পূণ্যভূমিতে এসে আগামী দিনে লড়াইয়ের শক্তি নিলাম। আমার কর্মসূচি রয়েছে হাবড়াতে। আমি এখানে পুজো দিতে এসেছি। কিন্তু সকাল থেকে মন্দির ঘিরে রয়েছে বিজেপির লোকজন। ওদের ২০০-২৫০ লোক রয়েছে। আমাদের পাঁচ হাজার। চাইলেই আমি গায়ের জোরে ঢুকতে পারি। কিন্তু ঠাকুরবাড়ি গায়ের জোর দেখানোর জায়গা নয়। এই মন্দির, এই মতুয়া ধাম কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয়। এর দ্বার সকলের জন্য খোলা।’