প্রতিবেদন: ঘরে-বাইরে ক্ষোভ আর বিরোধিতার চাপ সামলাতে এবার পরিকল্পনামাফিক ‘সাজানো নাটক’ করলেন মণিপুরের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং। তাঁর পদত্যাগের দাবিতে যখন অগ্নিগর্ভ মণিপুরের সব মহল সোচ্চার, তখন পদত্যাগের সাজানো নাটক করে আসলে গদি বাঁচানোর নির্লজ্জ কৌশল করলেন তিনি। শুক্রবার নিজের সমর্থকদের ময়দানে নামিয়ে পদত্যাগপত্র ছেঁড়ার কাণ্ড ঘটিয়ে আসল সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করলেন বিজেপির এই ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন-সাংসদকে ভর্ৎসনা কোর্টের
প্রায় দু মাস ধরে জ্বলছে মণিপুর। রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী, নিজের রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কেও তিনি ওয়াকিবহাল নন, এটা নিজের মুখে স্বীকার করেছেন তিনি। তার পরেও তিনি যেভাবে নির্লজ্জের মতো গদি আঁকড়ে রইলেন তাতে সকলেই অবাক। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, ইস্তফা না দিয়ে কার্যত দলের শীর্ষ নেতৃত্বকেই পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন বীরেন সিং। পূর্ব পরিকল্পিত চিত্রনাট্য মেনে, শুক্রবার দুপুর ২টা ২০ মিনিটে নিজের অনুগামী বিধায়কদের নিয়ে রাজভবনের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল বীরেনের। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থকরা তাঁর বাসভবন ঘিরে রাখে। তাঁদের দাবি মুখ্যমন্ত্রীকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে।
আরও পড়ুন-ক্রমান্বয়ে কেন্দ্রের বঞ্চনা, রাজ্যকে অবহেলা, তার মধ্যেও সাফল্য, আবাসে দেশে দ্বিতীয় বাংলা
এরপর মুখ্যমন্ত্রী বাসভবনের ভিতরে ঢুকে যান। বাইরে বেরিয়ে আসেন রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফাপত্রটি জনতার সামনে পড়তে শুরু করেন। সে-সময় কিছু মহিলা ওই ইস্তফাপত্রটি ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে দেন। তবে নাটকের এখানেই শেষ নয়। মণিপুর সরকারের মুখপাত্র সাপাম রঞ্জন সিং জানান, মুখ্যমন্ত্রী যাতে তাঁর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখেন সেজন্য সকলেই আর্জি জানিয়েছিলেন। সেই আর্জি মেনে মুখ্যমন্ত্রী আপাতত কাজ চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছেন। যদিও কিছুদিন আগেই রাজ্যের ৯ বিধায়ক স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের দায়িত্ব সামলাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। অবিলম্বে তাঁর সরে দাঁড়ানো উচিত।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
এদিকে এই পাহাড়ি রাজ্যে হিংসা থামার কোনও ইঙ্গিত এখনও মিলল না। বৃহস্পতিবার মাঝরাতেও রাজধানী ইম্ফলে নতুন করে হিংসা ছড়ায়। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোড়ে সেনা। জানা গিয়েছে, কাংপোকপি জেলায় জঙ্গিদের গুলিতে এক নৌসেনা নিহত হন। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতেই ইম্ফলে জড়ো হয়েছিলেন বহু মানুষ। ওই মরদেহ নিয়ে একটি মিছিল যখন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিল, তখন আচমকাই ফুঁসে ওঠে উন্মত্ত জনতা। শুরু হয় মারদাঙ্গা। জ্বালানো হয় টায়ার। সেসময় বাধ্য হয়ে নিরাপত্তাবাহিনী কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়।