প্রতিবেদন : জ্বলছে মণিপুর। তার আগুন লাগল এবার মিজোরামেও। জঙ্গিরা মিজোরামে বসবাসকারী মেইতেই গোষ্ঠীকে সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেছে রাজ্য ছাড়তে। তার কারণ, মণিপুরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মিজোরামবাসী এতখানি তেতে রয়েছেন যে, যেকোনও সময় আক্রমণ হতে পারে। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হওয়ায় মণিপুরের লোকজনকে দ্রুত এয়ারলিফ্ট করে নিয়ে আসার ভাবনাও শুরু হয়েছে। কিন্তু মিজোরামের মণিপুরীরা চাইছেন দ্রুত পদক্ষেপ। যেকোনও সময়ে বিপন্ন হতে পারে প্রাণ।
আরও পড়ুন-হাওড়ার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরের উপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা
যত দিন যাচ্ছে ততই মণিপুরের কারনামা প্রকাশ্যে আসছে। শিহরিত হচ্ছেন দেশের মানুষ। রবিবারও মণিপুরের চূড়াচাঁদপুরে চলেছে গুলি। আগুন লাগানো হয়েছে বাড়িতে। দু’মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরেও হিংস্রতা কমেনি মণিপুর জুড়ে। মণিপুরের ভাইপেই কাউন্সিল জানিয়েছে তাদের পাওয়া হিসেব অনুযায়ী— ৭ জনকে গণধর্ষণ করা হয়েছে, ১১ জনকে পিটিয়ে মারা হয়েছে, ৫ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও বহু মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত স্বাধীনতা সংগ্রামীর স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই গোটা দেশ উত্তাল। তৃণমূল কংগ্রেস রবিবার একটি নারকীয় ঘটনা প্রকাশ্যে এনেছে। একটি ১৮ বছরের কিশোরীকে গণধর্ষণ করা হয় গত ১৫ মে। ঘটনাটি ইম্ফল পূর্বের। এধরনের ভয়ঙ্কর নারকীয় ঘটনার কথা এখন একে একে সামনে আসছে। মানুষ জানতে পারছে। কিন্তু এতদিন কেন এগুলি চেপে রাখা হয়েছিল? তৃণমূল কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রধানমন্ত্রী কেন এর দায় নেবেন না? যেখানে আইন-শৃঙ্খলা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। বিরোধী রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের একটি দল মণিপুরের অবস্থা সরেজমিনে দেখতে যাবেন।
সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে আজ, সোমবার থেকে। মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রকে চেপে ধরবে ইন্ডিয়া জোট। সোমবার সকাল ১০টায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে জড়ো হবেন ইন্ডিয়ার প্রায় ৩০০ সাংসদ।
আরও পড়ুন-কুয়োয় পড়ে গেল ৩ বছরের শিশু, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজে এনডিআরএফ
ঐতিহাসিক এই জমায়েতে শামিল হবেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই জমায়েত থেকেই প্রতিবাদের ঝড় উঠবে রাজধানীর বুকে। যে ঝড় আছড়ে পড়বে সংসদের ভিতরেও। দাবি একটাই, মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জবাবদিহি করতে হবে। কেন তথ্য চেপে দেওয়া হল তার ব্যাখ্যা চায় গোটা দেশ। মণিপুরের হিংসা সামলাতে ব্যর্থ বিজেপি সরকার। আজও পরিস্থিতি হাতের বাইরে। এই ব্যর্থতার দায় কেন নেবেন প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? ৭৮ দিন চুপ করে থাকার মানে কি? যখন মণিপুরে হিংসার আগুন জ্বলছে, একের পর এক নারকীয় হত্যা, গণধর্ষণের ঘটনা ঘটছিল সে সময় প্রধানমন্ত্রী কখনও বিদেশে গিয়ে নিজের ইমেজ বিল্ডিং করছেন। আবার কখনও ভোটের প্রচার করছেন। আবারও কখনও মন কি বাত অনুষ্ঠান প্রচার করছেন। মণিপুরের কান্না যিনি শোনেন না, তিনি দেশবাসীকে মন কি বাতে কী শোনাবেন? কটাক্ষ বিরোধীদের।