সংবাদদাতা, কাটোয়া: আকাশে মেঘের আনাগোনা বাড়লে ওদের ডানায় কাঁপন ধরে। বৃষ্টিসুখের উল্লাসে উড়ান দেয় ওরা। উড়তে উড়তে চলে আসে কালনার কাঁকুড়িয়া পঞ্চায়েতের মানিকহার গ্রামে। এটাই চলছে টানা ৪০ বছর। বর্ষার বার্তা নিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি কোন সুদূর থেকে এই গ্রামে এসে ঘাঁটি গাড়ে, তার হদিশ নেই। বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে। সন্তানসন্ততির জন্ম দেয়। আর বর্ষা ফুরোলেই সংসার গুটিয়ে নিজের দেশে ফিরে যায়। কিন্তু মানিকহার গ্রামটাই কেন তাদের পছন্দ এসব জানতে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন-ছুতো পেয়েই অমর্ত্যকে উপাচার্যের অশালীন আক্রমণ, বিশ্বভারতীকে প্রাক্তনীর ১০ কোটির সম্পত্তি
কাটোয়া রেঞ্জের বনাধিকারিক শিবপ্রসাদ সিনহা বলেন, ‘‘পরিযায়ী পাখিরা সাধারণত শীতকালে আসে। আর মানিকহারে পরিযায়ী পাখিরা আসে বর্ষায়। কেন এই স্বভাব সেটা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’’ তবে গ্রামের মানুষ পাখিগুলিকে আগলে রাখেন। পাখিশিকারের চেষ্টা করলেই নগদ ৫০০ টাকা জরিমানা দিতে হয়। ‘পাখিদের গ্রাম’ বলেই পরিচিতি মানিকহারের। গ্রামের বড় গাছগুলির ডালে পাখিদের সংসার। সাদা-কালো রঙের গা আর ডানা শামুকখোলের মতো। পা আর ঠোঁট বেশ বড়। গ্রামের মুসলিমপাড়ায় পাখিদের বেশি ভিড়। শুকনো লতায়-পাতায় তৈরি বাসা থেকে মাঝে মাঝেই ডানা ঝটপটিয়ে চলে যাচ্ছে ধানখেতে। খাবারের সন্ধানে।
আরও পড়ুন-দুই জেলায় নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার
খাবার হিসাবে ওদের পছন্দ গেঁড়ি, গুগুলি, শামুক, পোকামাকড়। বর্ষার এই অতিথিদের নিয়ে গ্রামের আবু বক্কর কাজি, আসরফ শেখদের কথায়, ‘‘ওরা আমাদের গ্রামের কল্যাণের প্রতীক। ওরা এলে ফসল ভাল হয়।’’ তবে বর্ষা ফুরোলে গ্রামের বাসিন্দাদের খুশি ফুরোয়। ঘাসের আগায় শিশিরের রেখা আঁকা হলেই অতিথি পাখির দল সংসারপাতি গুটিয়ে ফেরার রাস্তা ধরে।