প্রতিবেদন : দেশের নাম বদল মুখের কথা নয়। ‘ইন্ডিয়া’ মুছে দিয়ে ‘ভারত’ রাখতে হলে একদিকে যেমন দেশের আমজনতাকে ফের লাইনে দাঁড়াতে হবে আধার, ভোটার পরিচয়পত্র সহ সমস্ত সরকারি নথি ও টাকা-পয়সা বদলের জন্য, অন্যদিকে বিপুল আর্থিক চাপ পড়বে দেশের অর্থনীতিতে। সব মিলিয়ে এক নামের ধাক্কায় স্রেফ অকারণে চূড়ান্ত নাজেহাল হতে হবে দেশের সর্বস্তরের মানুষকে।
আরও পড়ুন-‘হিংসা নয়, শান্তি চাই’, জৈনদের অনুষ্ঠানে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
প্রশ্ন হল, দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’ মুছে ফেলতে কেন্দ্রের কোষাগার থেকে কত খরচ হতে পারে? এর প্রাথমিক আভাস যা পাওয়া গিয়েছে তাতে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইন্ডিয়া থেকে শুধু ভারত হয়ে ওঠার জন্য কেন্দ্রীয় কোষাগার থেকে খরচ হতে পারে অন্তত ১৪ হাজার কোটি টাকা।
আরও পড়ুন-পিএফের দাবিতে বিক্ষোভ
দেশের নাম বদল নিয়ে চর্চা শুরু হতেই একটি হিসেব প্রকাশ্যে এনেছেন মেধাস্বত্ব বিষয়ক মামলার আইনজীবী ড্যারেন অলিভার। ২০১৮ সালে ঔপনিবেশিকতার চিহ্ন মুছে দিতে আফ্রিকার রাষ্ট্র সোয়াজিল্যান্ড নাম পালটে হয় এসয়াতিনি। এই নাম বদলের সময়ে যে মডেল অনুযায়ী কাজ করেছিলেন অলিভার, সেই অনুযায়ী ভারতের নামবদলের আনুমানিক খরচের হিসাব দিয়েছেন তিনি। তাঁর তত্ত্ব অনুযায়ী, একটি ব্র্যান্ডের গড় মার্কেটিং তার লভ্যাংশের ৬ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে সেই ব্র্যান্ড যদি নতুন করে নিজের পরিচয় গড়ে তুলতে চায়, তাহলে এই খরচের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১০ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২-২০২৩ আর্থিক বছরে দেশের রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল ২৩.৮৪ লক্ষ কোটি টাকা। ফলে যদি দেশের নাম বদল করা হয় এই খাতে মার্কেটিং খরচ হবে ১৪ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ নাম বদলটাই বিষয় নয়, এর পিছনে বিপুল খরচের ধাক্কাও ব্যাপক। আর গত ৭৫ বছর ধরে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের পরিচিতি ইন্ডিয়া হিসেবেই।
আরও পড়ুন-কাটোয়ায় ঘুরে গেলেন খাদ্য দফতরের প্রধান সচিব, দুয়ারে সরকার শিবিরে নজরদারি
প্রসঙ্গত, জি-২০ শীর্ষবৈঠকে অংশ নেওয়া বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের কাছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্র মঙ্গলবার প্রকাশ্যে আসে। যেখানে দেখা যায়, ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’র পরিবর্তে সেই পত্রে লেখা রয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’। এরপরই জল্পনা, লোকসভা ভোটের আগে জাতীয়তাবাদের মেকি হাওয়া তুলতে ভারত নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে হইচই করবেন বিজেপি নেতারা।