সংবাদদাতা, হাওড়া : ঘরের ভেতর শুয়ে অসুস্থ বৃদ্ধা মা। তার ঠিক পাশের ঘরেই পড়ে রয়েছে ছেলের পচাগলা নিথর দেহ। তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে দরজায় ফাঁক গলে বেরিয়ে আসছে রক্ত। রবিবার সকালে হাওড়ার শিবপুরের কাসুন্দিয়া এলাকার প্রসন্নকুমার লেনের এই ঘটনা চাক্ষুষ করে শিউরে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ জানায়, ওই বাড়িতে থাকতেন লাল্টু সরকার (৫০) ও তাঁর মা মালতী সরকার(৭৪)। লাল্টু মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। কোনও কাজকর্ম করতেন না।
আরও পড়ুন-আসানসোলে চালু দুই দূষণহীন বাস
তাঁর মা মালতী সরকার ২০১৬ সালে স্বামী মণ্টু সরকারের মৃত্যুর পর থেকে ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করেন। মণ্টু সরকার রেলে চাকরি করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর থেকে সেই পেনশনের টাকাতেই সংসার চলত মা-ছেলের। তবে দু’জনেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় গত কয়েক মাস পেনশনের টাকাও তোলা হয়নি। অসুস্থতার কারণে প্রতিবেশীদের সঙ্গে খুব একটা মেলামেশা করতে পারতেন না তাঁরা। আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গেও খুব একটা যোগাযোগ ছিল না। প্রতিবেশীরা জানান, গত দু’দিন ধরে এই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। এরই মধ্যে এদিন সকালে দরজার তলা দিয়ে কালচে হয়ে যাওয়া রক্ত বেরোতে দেখেন তাঁরা। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়দের থেকে খবর পেয়ে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঢুকে দেখে একটি ঘরের চেয়ারে বসেই মৃত্যু হয়েছে লাল্টু সরকারের। পাশের ঘরে বিছানায় শুয়ে রয়েছেন মা মালতী সরকার।
আরও পড়ুন-৩০ কোটি টাকার কেলেঙ্কারি, চিটফান্ড খুলে প্রতারণা, ধৃত বিশ্বভারতীর বাংলার ছাত্রী
পুলিশ এসে লাল্টুর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। পুলিশের অনুমান, অন্তত তিনদিন আগে মারা গেছেন লাল্টু। দীর্ঘ অসুস্থতার জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তবে কীভাবে এবং কবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই তা স্পষ্টভাবে জানা যাবে। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অসুস্থ মালতী সরকারকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাওড়া জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।