বেড়েই চলেছে দেশব্যাপী বেকারত্ব। মোদি জমানায় গত ৯ বছরে ভারতে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। এবার তা নিয়ে সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এবং বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. অমিত মিত্র। দেশে ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের হার নিয়ে তিনি তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ভুয়ো দাবির বিরুদ্ধে। এক্স হ্যান্ডেলে মোদির উদ্দেশে তিনি লিখেছেন, আপনার বলা সবকা সাথ, সবকা বিকাশ এখন বড় তিক্ত শুনতে লাগছে। কারণ ২০২৩-এর অক্টোবর মাসে (যা প্রধানত উৎসবের মাস বলেই গণ্য হয়) দেশের ৪৭ মিলিয়ন মানুষ বেকার। অমিত মিত্রর মন্তব্য, ৪৭ মিলিয়ন, যা কিনা স্পেনের মতো দেশের মোট জনসংখ্যা! আর সেই সংখ্যক মানুষ এদেশে বেকার অবস্থায় রয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্ট স্মরণ করিয়েছেন অমিত মিত্র। বলেছেন, ২০২২ সালে ভারতে যুব বেকারত্বর রেকর্ড ছিল সর্বোচ্চ ২৩.২২ শতাংশ। সেই একই সময়ে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের বেকারত্বের হার ছিল ভারতের চেয়ে কম, ১২.৯ শতাংশ। আর এবং ভুটানের বেকারত্ব ছিল ১৪.৪ শতাংশ। প্রতিবেশী দেশগুলির এই পরিসংখ্যান তুলে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে শ্লেষ ছুঁড়ে দিয়েছেন অমিত মিত্র। তাঁর জিজ্ঞাস্য, কিসকা সাথ (কার সঙ্গ দিচ্ছেন আপনি), কিসকা বিকাশ (কার বিকাশ হচ্ছে), দেশজুড়ে যে অমৃতকালের স্লোগান দেওয়া হচ্ছে এই অমৃতকাল আসলে কার?
প্রসঙ্গত, সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি বা সিএমআইই’র রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে দেশজুড়ে বেকারত্বের হার পৌঁছে গিয়েছে ১০.০৯ শতাংশে। গত দু’বছরের মধ্যে যা সর্বাধিক। আর সবথেকে বেহাল অবস্থা গ্রামাঞ্চলে। সেখানে বেকারত্বের হার এক ধাক্কায় ৬.২ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১০.৮২ শতাংশ। বছরে দু’কোটি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির মসনদে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ন’বছর বাদে দেশ যখন আরও একটি লোকসভা নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে, তখন বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৪ সালে যেখানে সার্বিকভাবে দেশের বেকারত্বের হার ছিল ৫.৪৪ শতাংশ, সেখানে ২০২৩-এর অক্টোবরে তা বেড়ে হয়েছে ১০ শতাংশের উপরে। আর তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে বারবার মিথ্যাচারের জন্য দুষেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন- সুপ্রিম-শুনানি না হওয়া পর্যন্ত দিল্লিতে জোড়-বিজোড় প্রকল্প স্থগিত