পেগাসাস আড়িকাণ্ডে যখন সরকারের বিরুদ্ধে ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণের অভিযোগে দেশ জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে তখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক নির্দেশিকায় ফের তৈরি হল বিতর্ক। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী,
আগামী ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত যে কোনও ব্যক্তিকে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে যখন তখন হেফাজতে নিতে পারবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশ। সম্প্রতি এক নির্দেশিকা জারি করে দিল্লি পুলিশকে এই অধিকার দিয়েছেন দিল্লির উপ-রাজ্যপাল অনিল বৈজল। স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগে এই নির্দেশিকা দেখে রাজনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, প্রতিবাদীদের দমন করতেই এই আইন ব্যবহার করবে দিল্লি পুলিশ। কেন্দ্রীয় কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে গত বছর থেকে দিল্লিতে আন্দোলনরত কৃষকদের ওপর কড়া নজরদারির জন্য উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। স্বাধীনতা দিবসের দিন দিল্লির যন্তরমন্তরে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে ‘কিসান সংসদ’ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। সেই আন্দোলন দমন করতেই এই উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-টোকিওয় প্রথম পদক জয়ী মীরাবাই চানুকে শুভেচ্ছা জানালেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী
সম্প্রতি দিল্লির উপ রাজ্যপালের তরফে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা আইনের ১৯৮০-র ২ ধারা অনুযায়ী ক্ষমতা প্রয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উপরাজ্যপালের তরফে। তিনি জানিয়েছেন, ১৯ জুলাই থেকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে দিল্লি পুলিশ কমিশনার এনএসএ বা ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে যে কাউকে গ্রেফতার করার ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুন-দিল্লিতে বিকল্পের পদধ্বনি, রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রার্থী জহর সরকার
এদিকে এই নির্দেশিকার পর দিল্লি পুলিশ একে সাধারণ নির্দেশিকা বলে উল্লেখ করলেও মোদি সরকারের অঙ্গুলিহেলনে যখন তখন এই নির্দেশিকা অপব্যবহারের আশঙ্কা থাকছে। পুলিশ সূত্রে খবর, জাতীয় নিরাপত্তা আইনের ক্ষমতাবলে পুলিশ যে কোনও ব্যক্তিকে মাসের পর মাস হেফাজতে রাখতে পারে। অভিযুক্ত ব্যক্তি দেশের নিরাপত্তা ও আইন-শৃংখলার জন্য বিপজ্জনক এই যুক্তি দেখিয়ে কাউকে গ্রেফতারের সময় এই ধারা প্রয়োগ করা হয়। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে দিল্লি পুলিশকে এনএসএ ব্যবহারের অনুমোদন প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, এটা পুরোপুরি কৃষক আন্দোলনকে দমন করার জন্যই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কারণ কেন্দ্রের তিন কৃষি আইনের প্রতিবাদে আরও তীব্র আন্দোলনের পথে হাঁটতে চলেছেন কৃষকরা। সেই আন্দোলন দমন করতেই এই উদ্যোগ।