নোনাজল গল্পে সমুদ্রের বুকে নীল আকাশের রূপে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে জনাব সৈয়দ মুজতবা আলি বেশ আক্ষেপ করেই লিখেছিলেন, ‘কবিত্ব আমার আসে না, তাই প্রকৃতির সৌন্দর্য্য আমার চোখে ধরা পড়ে না, যতক্ষণ না রবি ঠাকুর সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। তাই আমি চাঁদের আলোর চেয়ে পছন্দ করি গ্রামোফোনের বাক্স।’ আজ রবি ঠাকুরও নেই; আর নেই গ্রামোফোনও। তবে এই ইন্টারনেটের মায়াজড়িত সময়কালেও ওই বিস্ময়কর ব্রহ্মাণ্ড আজও সাধারণ মানুষের নজর কেড়েছে। যেন মেলা বসেছে আকাশ জুড়ে শিশু-তারাদের ভিড়ে!
আরও পড়ুন-ডায়মন্ড হারবারের সামনে ভাটিকা, আই লিগে আজ অভিযান শুরু কিবুর দলের
মানবজাতির কাছে ওই নিশীথ নিসর্গ আজও সমানভাবে রহস্যে মোড়া। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অত্যাধুনিক কেরামতিতে সেইসব রহস্য উন্মোচনের তাগিদে গোটা পৃথিবী জুড়ে একদল বিজ্ঞানী নিরন্তর গবেষণারত। মহাকাশের ওইসব রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে ব্রহ্মাণ্ড-বিস্ময় সাধারণ মানুষের কাছে আরও বেশি রোমাঞ্চকর হয়ে উঠেছে। মানবজাতির সম্মুখে খুলে গেছে আবিষ্কারের নতুন দরজা; উন্মুক্ত হয়েছে জ্ঞানের আলো; প্রশস্ত হয়েছে আরও নতুন কিছু পাওয়ার প্রত্যাশা; আর উদ্দীপিত হচ্ছে দীর্ঘায়িত কৌতূহলের বাজি!
এ-বছর ১৩ জুলাই আমেরিকার ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা নাসার বিজ্ঞানীরা সাধারণ মানুষের জন্য ওই বিচিত্র মহাশূন্যের এক রোমহর্ষক চিত্র উপহার দিয়েছেন। ছবিটি আকাশপানে চেয়ে থাকা সাধারণ মানুষের জন্য জেমস ওয়েব দূরবীক্ষণ যন্ত্রের এক বছরের অক্লান্ত পর্যবেক্ষণের সওগাতস্বরূপ।
আরও পড়ুন-স্বচ্ছতা আনতে বিজ্ঞপ্তি জারি করল অর্থ দফতরের ই-গভর্ন্যান্স শাখা
লাল-নীল-হলুদ-কালো নানা বর্ণে রঞ্জিত আকর্ষণীয় চিত্রটি আসলে একটি শিশু-নক্ষত্রপুঞ্জ। যেন মহাশূন্যে সদ্যোজাত তারাদের পসরা বসেছে! জন্ম নিচ্ছে নতুন নতুন সূর্যের মতো নক্ষত্র, তৈরি হচ্ছে নবজাত তারামণ্ডল! বিজ্ঞানীদের মতে ওই নির্দিষ্ট অঞ্চলে প্রায় পঞ্চাশটি শিশু-নক্ষত্রের সমাবেশ।
পৃথিবীর ছায়াপথ ‘দ্য মিল্কি ওয়ে’র খুব নিকটেই, মাত্র তিনশো নব্বই আলোকবর্ষ দূরে জেমস ওয়েব দূরবীক্ষণ যন্ত্র ২০২২ সালের জুলাই মাসে এই ছবিটি তুলেছিল। বিজ্ঞানীরা মনে করেন ওই সময় ছায়াপথের অনতিদূরে জন্মসংক্রান্ত বিকট আওয়াজ ও বিশৃঙ্খলা অনুমান করে দূরবীক্ষণে বিদ্ধ ‘এন আই আর ক্যাম’ নামে লেন্সটি একজটলা ঘন মহাকাশীয় মেঘের মধ্যে অনুসন্ধানপর্ব চালায় এবং এই ছবিটি সংগ্রহ করে। আঠারোটি ছয়বাহুবিশিষ্ট আয়নার টুকরো ব্যবহার করে আলোর বিচ্ছুরণ বিন্যাস সহযোগে ওই মেঘের মহাজোটের মধ্যে উপস্থিত সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রপুঞ্জের ছবি তোলা হয়। এক বছর পর সেই ছবি বিশ্লেষণ করে জ্যোতির্বিদদের তো চক্ষুচড়কগাছ। ওই মেঘমণ্ডলে কচি কচি তারাদের কোলাহল! মনে করা হয় ওই মেঘমালা নাকি নতুন তারার জন্ম দেয়।
আরও পড়ুন-তৃণমূলের ৬ ইস্যুতে উত্তাল সর্বদল বৈঠক
কখনও প্রস্ফুটিত ফুলের পাপড়ির মতো, কখনও স্ক্রুর ন্যায় পেঁচালো কিছু, কখনও এঁটেল পোকার মতো তো কখনও আবার গাঁদাফুল, কখনও মায়াবী উপহ্রদ তো কখনও কাঁকড়া ও কালপুরুষ, কখনও ছাঁচে ঢালা টকটকে গোলাপ তো কখনও ডানামেলা রঙিন প্রজাপতি, কখনও পটে আঁকা আলপনা তো কখনও ডাম্বেল— এমনই বিচিত্র দেখতে ওই মেঘের মহাজোট। তবে যেমনই দেখতে হোক না কেন, আসলে ওরা ডিম্বাশয়; ওখান থেকেই জন্ম হয় নতুন নতুন নক্ষত্রের।
আরও পড়ুন-ইউজিসির গেরুয়াকরণ সেলফি হুলিয়ায় বিস্ময়
ধাত্রী মেঘের মহাজোটই হল নীহারিকা। একসময় নীহারিকা ছিল ছায়াপথ-সহ যে কোনও ধরনের বিস্তৃত জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তু বা বস্তুসমষ্টির সাধারণ নাম যা আকাশগঙ্গার বাইরে অবস্থিত। ক্রমে ক্রমে এদের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য আরও নির্দিষ্ট হয়ে উঠেছে। ওদের মধ্যস্থিত তপ্ত তারা দ্বারা দৃষ্ট আলোকপ্রভার কারণে দৃশ্যমান এই মেঘের চাঁই। ওই মহামণ্ডলীয় মেঘের মধ্যেই রয়েছে মহাজাগতিক সূর্য-তারার লেবার রুম! ওদের বিশাল আকার, কোনও কোনওটির ব্যাস আবার কয়েক আলোকবর্ষ দূরের; তারই মাঝে প্রসব-পীড়া ‘সুপারনোভা’— সে এক বিকট ঝঞ্ঝা। তারপরেই নতুনের আনন্দ!
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
বিস্তৃত নিসর্গের বুকে অবস্থিত বহু সংখ্যক ছায়াপথ, তার মাঝে রয়েছে অসংখ্য ধূলিকণা, হাইড্রোজেন গ্যাস এবং প্লাজমা দিয়ে তৈরি আন্তঃনাক্ষত্রিক জমাট মেঘ, যাকে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা নীহারিকা বলে থাকেন। এটি হল বাইরের মহাকাশে গ্যাস ও ধূলিকণার একটি গাঢ় মেঘ যা রাতের আকাশে একটি অস্পষ্ট উজ্জ্বল প্যাচ হিসেবে বা অন্যান্য আলোকিত পদার্থের বিপরীতে একটি অন্ধকার সিলুয়েট বা ছায়ামূর্তি হিসেবে আমাদের চোখে পড়ে। ওই এলাকায় ওই জাতীয় গ্যাস, ধূলিকণা ও অন্যান্য আরও নানাবিধ পদার্থের মেঘ নিজেদের মধ্যে অভিকর্ষজ টানের দরুন একত্রিত হয়ে একটি বিকট জটলা তৈরি করে। একটি বামন নক্ষত্রের আকার দেয়। ওইসব বামন নক্ষত্ররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে চলাফেরা করে, নিজেদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও ওজনের টানে ওরা পরস্পরের সঙ্গে ঘটায় জোর বিস্ফোরণ। ওই নির্দিষ্ট মেঘজটলার কেন্দ্রস্থল অত্যন্ত গরম হয়ে ওঠে; শুরু হয় হাইড্রোজেন গ্যাসের রাসায়নিক নিউক্লিয়ার সংযোজন প্রক্রিয়া, উৎপন্ন হতে থাকে অধিক স্থিতিশীল হিলিয়াম গ্যাস। তৈরি হয় টুকরো টুকরো ‘ব্লবস্’। সব কিছু ভেঙে চুরমার হয়ে যাওয়ার অবস্থা আর কী! এ হল সেই ‘ন্যাটাল ক্যাওয়স্’ বা জন্মসংক্রান্ত বিশৃঙ্খলা! তৈরি হয় কচি কচি ‘প্রোটোস্টার’ বা শিশু-নক্ষত্র। একদিন এরাই পূর্ণ নক্ষত্রের আকার ধারণ করবে। আবার বিস্ফোরণ ঘটবে, আবার নতুন তারার জন্ম হবে।
আরও পড়ুন-বঞ্চনা-অপমানের প্রতিবাদে উত্তাল, গর্জে উঠল কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ
ওই প্রকার গর্ভিণী মেঘের মহাজোট থেকে কিছু সংখ্যক সূর্যের মতো নক্ষত্রের জন্ম হয়; তবে সমস্ত বিচ্ছুরিত টুকরো কিন্তু তারায় পরিণত হয় না। কিছু অংশ শুধুমাত্র ধুলিকণা ও গ্যাসের পিণ্ড হয়েই রয়ে যায়; কিছু সংখ্যক অ্যাস্টারয়েড বা গ্রহাণু, প্লানেট বা গ্রহ এবং কোমেট বা ধূমকেতু হয়ে রয়ে যায়। মনে করা হয় যত বড় তারা ততই ছোট নাকি তাদের জীবনসীমা! তবে যাই হোক এই সুবিশাল নক্ষত্রেরা বহু বিলিয়ন বছর ধরে আমাদের সঙ্গে ওই ঝিকিমিকি নিশীথ আকাশগঙ্গায় হাসি বিনিময় করতে ভুলে যায় না। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ব্যাখ্যায় একটি নক্ষত্রের কেন্দ্রস্থলের সমস্ত হাইড্রোজেন গ্যাসের রাসায়নিক নিউক্লিয়ার সংযোজন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেলে, তার বাইরের দিকে পরিবেষ্টিত কাঠামোতে নিউক্লিয়ার সংযোজন প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং তার কেন্দ্রস্থল ক্রমশ শীতল ও বৃদ্ধি পেতে থাকে। একসময় সেটি একটি লাল দানবে পরিণত হয়। ব্রহ্মাণ্ডে ভ্রুকুটি করে!
আরও পড়ুন-কল্যাণী এইমস নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২ বিজেপি বিধায়ককে ফের তলব সিআইডির
বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কার্বন, নাইট্রোজেন ও অক্সিজেনের মতো উপাদানের উৎপত্তিস্থলই হল নক্ষত্রমণ্ডলী। ওখান থেকে সৃষ্ট সদ্যোজাত তারাদের দল অন্যান্য গ্যাস ও ধূলিকণার মেঘপুঞ্জের সঙ্গে ছায়াপথের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। তাই তো পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্রের জন্মদায়িনী দ্য রো ওফিউচি আণবিক মেঘের মহাজোটের মধ্যে শিশু-তারারা অবলোহিত রশ্মির আলোকচ্ছটায় চিকচিক করছে। রো ওফিউচি হল প্রাচীন মহাকাশ বিজ্ঞানী টলেমির চিহ্নিত করা আটচল্লিশটি নক্ষত্রপুঞ্জের মধ্যে একটি; ওফিউচি হল একটি গ্রিক শব্দ যার অর্থ সাপের মতো পেঁচিয়ে ধরা। এই নক্ষত্রমণ্ডলীটির মধ্যে বেশ অনেকগুলো নীহারিকা বর্তমান।
দ্য রো ওফিউচি নীহারিকা থেকে জন্ম নিয়েছে একদল নতুন নক্ষত্র। একদিন তারাও জন্ম দেবে অসংখ্য অপত্য সূর্যের। আসলে নীহারিকা হল একটি নিষিক্ত গর্ভ, যেখান থেকে তারাদের জন্ম হয়। কথিত আছে প্রায় দেড়শো খ্রিস্টপূর্বাব্দে বিজ্ঞানী টলেমি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ ‘অ্যালমাজেস্ট’-এ তিনি একটি পাঁচতারার সমষ্টিকে নীহারিকা বলে বর্ণনা করেছিলেন। নক্ষত্রপুঞ্জের চেয়ে আলাদা বৈশিষ্ট্য বহন করে এমন মেঘজটলা বা নীহারিকার প্রকৃত অর্থ প্রথম বর্ণনা করেন মুসলিম পার্সি জ্যোতির্বিজ্ঞানী আব্দ-আল-রহমান আল-সুফি, তাঁর বিখ্যাত ‘বুক অব ফিক্সড স্টারস্’ বইয়ে ৯৬৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। পরবর্তীতে ১৬১০ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিকোলাস ক্লউডি ফাব্রি ডে পেইরি এবং ১৬১৮ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি গণিতবিদ জোহান ব্যাপটিস্ট সাইস্যাট মহাশূন্যের সবচেয়ে উজ্জ্বল নীহারিকা কালপুরুষের বর্ণনা দেন। তবে ১৬৫৯ খ্রিস্টাব্দে ডাচ জ্যোতির্বিদ ক্রিশ্চিয়ান হুইগেন্স দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে কালপুরুষের বর্ণনা দিয়ে নীহারিকা সম্পর্কে প্রথম স্বচ্ছ ও সঠিক ধারণা দিয়ে সাধারণ মানুষের কৌতূহল নিবৃত্ত করেন। নীহারিকা আকার-আকৃতি অনুসারে নানা ধরনের হয়ে থাকে। সচরাচর উৎসারিত নীহারিকায় নতুন নক্ষত্রের জন্ম হয়।
আরও পড়ুন-শীতকালীন অধিবেশনের আগেই সর্বদল বৈঠকে কেন্দ্রকে চাপে ফেলল তৃণমূল
বছর দুয়েক আগে নাসার হাবল স্পেস দূরবীক্ষণ যন্ত্র প্রদত্ত এমনই একটি নতুন তারার জন্মগত চিত্র মানুষের সম্মুখে উঠে এসেছিল। ঘটনাটি ছিল মহাকাশে উপস্থিত কালপুরুষ নামে উজ্জ্বল একটি আণবিক মেঘজটলার মাঝে সৃষ্ট নক্ষত্র ও তার থেকে নিঃসৃত উষ্ণ গ্যাসীয় প্রবাহের। বিজ্ঞানীরা এদের একত্রে নাম রেখেছেন ‘হারবিগ-হ্যারো চব্বিশ’। এ আর এক লোমহর্ষক ব্রহ্মাণ্ড-বিস্ময়! দেখা গিয়েছে এক্ষেত্রেও একটি বিশাল গ্যাসের মেঘবলয়ের মধ্যস্থিত উজ্জ্বল নক্ষত্র থেকে দুটি বিপরীতমুখী উষ্ণ আণবিক হাইড্রোজেন গ্যাসের প্রবাহ প্রায় একলক্ষ মাইল প্রতি ঘণ্টা বেগে পরস্পরের সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটায়। ঘটনাস্থলে তড়িতাহিত শক উৎপন্ন হয় এবং গ্যাস ও ধূলিকণার মেঘ-চাকতি গঠিত হয়। তারই মাঝে নতুন তারারা জন্ম নেয়! এই নির্দিষ্ট নীহারিকাটির ব্যাস মাত্র অর্ধেক আলোকবর্ষ দূরের এবং এটি আমাদের সৌরজগৎ থেকে ১৩৫০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। কল্পবিজ্ঞানের সেই বিখ্যাত হলিউডি স্টার ওয়ার্স সিনেমায় জেডি নাইটরা যেমন ধরনের তলোয়ার ব্যবহার করেছিলেন, ‘হারবিগ-হ্যারো চব্বিশ’ও ঠিক তেমনি আলোকরশ্মির মতো চকচকে ও ক্ষমতাশালী দ্বিধারী ফলাযুক্ত তলোয়ারের মতো দেখতে।
আরও পড়ুন-ভোটের আগে বেতন কমিশন নয়
সত্যিই এইসব মহাজাগতিক কাণ্ডকারখানা সাধারণ মানুষের কল্পনাশক্তিকেও হার মানাবে। শুধু আমজনতা কেন, স্বয়ং আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা নিজে এইপ্রকার আন্তঃনাক্ষত্রিক সৌন্দর্যে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে ট্যুইট করে আবেগ প্রকাশ করেছেন। আমেরিকার ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা নাসার প্রশাসক মিঃ বিল নেলসন মন্তব্য করেছেন যে, বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়ার, কলাকৌশলী, শিল্পী, নেতা ও আরও অনেকেই নিরন্তর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের উৎস কী এবং সেখানে আমাদের অবস্থান কোথায় তা জানার জন্য। আমরা নিশ্চয়ই একদিন সফল হবই।
আরও পড়ুন-২০০০ টাকার নোট এখনও বৈধ! কী জানাচ্ছে RBI
মহাকাশ তো নয়, যেন বেহেস্তের প্রমোদ উদ্যান! যেন একটি ছবি একটি নতুন আবিষ্কার। মহাকাশকে নতুন আঙ্গিকে দেখার এক অদ্ভুত মাদকতা। বিজ্ঞানীদের কাছে বিকেলে ভোরের ফুলের মতো রহস্যঘন। ব্রহ্মাণ্ড যেন তাঁদের কাছে অজানা তথ্যের এক শ্বাসরুদ্ধকর সোনার খনি! যেসব বিষয় তাঁদের স্বপ্নেও হয়তো কোনওদিন আসেনি, তাঁরা সেই সব প্রশ্ন ও উত্তরের তত্ত্বতালাশের রসদ পেয়েছেন আজ। পুরো মানবজাতির সামনে খুলে গেছে এক বিশাল প্রবেশদ্বার। ওই জট পাকানো ধূলিকণা ও গ্যাসের মধ্য দিয়ে তাকিয়ে পৃথিবীর বুকে কোনও এক কোণায় বসে ওই মহাশূন্যের কোনও এক প্রান্তের আলোকচ্ছটা অবলোকন করা— এ-কথা ভাবলেই গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। সত্যিই ভাবতে অবাক লাগে ওই মহাশূন্যে আমাদের মতোই হয়তো আরও অনেক সৌরজগতের উপস্থিতির কথা; তবে কি ওই ব্রহ্মাণ্ডে কোথাও রয়েছে আমাদের মতোই প্রাণিজগৎ! জানি না… হবে হয়তো!