পেগাসাস কেলেঙ্কারি নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে মোদি সরকারকে আক্রমণ করল কংগ্রেস। কংগ্রেসের টুইটে অভিষেকের ছবি দিয়ে ফোনে আড়ি পাতার বিষয়টি উল্লেখ করে লেখা হয়েছে মোদি সরকার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বিধানসভা ভোটের আগে অভিষেকের ফোনে আড়ি পাতার প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেসের টুইটের পরেই রাজনৈতিক মহল সরগরম। সোমবারই দিল্লি যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার থেকে দিল্লির দরবারে নানা তৎপরতা। ঠিক তার আগে কংগ্রেসের টুইট নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা তুঙ্গে।
আরও পড়ুন-শিশুপাচারকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত অধ্যক্ষের সঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছবি এবার প্রকাশ্যে
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় এই টুইটের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন,” কংগ্রেসের টুইটকে স্বাগত জানাচ্ছি।” তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ওব্রায়েন এটি রিটুইট করেছেন। ডেরেকের বক্তব্য, সরকার চায় না সংসদ চলুক। পেগাসাস নিয়ে ওরা কোনোরকম আলোচনা চায় না।
রবিবার সকালে পেগাসাস ইস্যুতে বিজেপিকে তোপ দেগে একটি টুইট করে কংগ্রেস। যেখানে সরাসরি তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর নজরদারির প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়। টুইটে অভিষেকের ছবিসহ লেখা হয়, “আপনারা ক্রোনোলজি বুঝুন। পেগাসাস দিয়ে নজরদারি চালানো হয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর। এটি করা হয় ২০২১ সালে, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে। মোদি সরকারের নিরাপত্তাহীনতা চরম আকার নিয়েছে।” পেগাসাস ইস্যুকে হাতিয়ার করে ইতিমধ্যেই একযোগে সংসদে সরব হয়ে উঠেছে কংগ্রেস তৃণমূল সহ অন্যান্য বিরোধীরা। তবে সেখানে কংগ্রেসের তরফে আলাদা করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে পেগাসাস টার্গেট করার প্রতিবাদ করার ঘটনা নিশ্চিত ভাবেই রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কলকাতায় তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ” সারা দেশ জানে মোদির বিজেপি কোন দলকে আর কাদের আসল প্রতিপক্ষ ভাবে। বাংলার এবারের বিধানসভা নির্বাচন সারা দেশকে বাস্তবটা বুঝিয়ে দিয়েছে। সেদিক থেকে কংগ্রেসের টুইট বাস্তবেরই প্রতিফলন।” তাঁকে প্রশ্ন করা হয় বিকল্প জোট নিয়ে। কুণাল জবাবে বলেন,” এনিয়ে চূড়ান্ত কথা বলার সময় আসেনি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো কখনও কংগ্রেস ছাড়া জোটের কথা বলেননি। তিনি বিজেপিকে হঠাতে সব ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শক্তিকে এক হতে বলেছেন। একুশে জুলাই দিল্লিতে কনস্টিটিশন ক্লাবে তৃণমূলের কর্মসূচিতে কংগ্রেস শীর্ষনেতারা ছিলেন। তৃণমূলের ব্রিগেডে সোনিয়াজিকে আমন্ত্রণের কথাও নেত্রী বলেছেন। তৃণমূল দেখিয়ে দিয়েছে তারা বিজেপির শীর্ষতম নেতৃত্বের মিলিত শক্তিকে হারাতে পারে। এই বাস্তবের উপর দাঁড়িয়েই কংগ্রেসকে তাদের ভূমিকা স্থির করতে হবে।”
আরও পড়ুন-“মমতা দি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড চালু না করলে আমাকে চিরকাল শয্যাশায়ী থাকতে হত”
দিল্লিতে একাধিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ বলছেন এই টুইট আসলে একটি বার্তা। তৃণমূল বিষয়টিকে স্বাগত জানালেও বাড়তি কোনো উচ্ছ্বাস দেখিয়ে এখনই কোনও উপসংহারমূলক মন্তব্যে নারাজ। তবে কংগ্রেসের টুইটে অভিষেককে এতটা গুরুত্ব দেওয়ার বিষয় নিয়ে রাজধানীর রাজনীতিতে জোর শোরগোল চলছে।