প্রতিবেদন : একশো দিনের কাজের বরাদ্দ দীর্ঘ দিন ধরে আটকে রেখেছে কেন্দ্র। ওই প্রকল্পের কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে নিজের কোষাগার থেকই তাঁদের কাজ দেওয়ার ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। একই রকম ভাবে আবাস যোজনা প্রকল্পেও দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রের বঞ্চনার স্বীকার রাজ্যের গরিব মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এবার তাঁদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার পরিকল্পনাও করছে রাজ্য সরকার। তবে রাজ্যের কোষাগার থেকে এই সব প্রকল্পের বরাদ্দ জোগাতে বিপুল অর্থের প্রয়োজন।
আরও পড়ুন-আজ থেকে বৃষ্টির আশঙ্কা, কমবে শীত
যে কারণে আগামী বছর পঞ্চায়েত দফতরের বাজেট বরাদ্দ বিপুল পরিমাণ বাড়ানোর ইঙ্গিত মিলেছে। গতবছর এই দফতরের বাজেট ছিল ২৪ হাজার কোটি টাকা। তা এবার ১০ থেকে ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৫৫০০ কোটি টাকা হতে পারে। যদিও এখনও সব হিসেব-নিকেশ চূড়ান্ত হয়নি। তবে পঞ্চায়েত দফতরের বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে।
এ ছাড়াও রাজ্যের বেশ কিছু দফতরের বাজেট বৃদ্ধি হতে পারে ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরেই প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বাজেট বৃদ্ধি হতে পারে।
১০০ দিনের কাজ-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পে মোদি সরকার টাকা না দেওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে বাংলার গ্রামীণ উন্নয়ন। একাধিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও রাজ্য নিজের ভাঁড়ার থেকে অর্থ খরচ করে উন্নয়ন গতিশীল রাখার চেষ্টা করছে। কেন্দ্রের অর্থ বরাদ্দ কার্যত অনিশ্চিত হওয়ায় যাতে উন্নয়ন ব্যাহত না হয় আর যাতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হন তার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্যের আয় বাড়িয়ে বিভিন্ন দফতরের বাজেট বৃদ্ধির পথে হাঁটছে।
আরও পড়ুন-উন্মাদনায় ফিরল আসিয়ানের স্মৃতি
২০২৪-২৫ আর্থিক বছরে সেই সূত্রেই রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের বাজেট প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা বাড়তে চলেছে। গ্রামীণ এলাকার রাস্তাঘাট, পানীয় জল, স্বাস্থ্য পরিষেবা ইত্যাদি নানা কাজ করা হয় রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের মাধ্যমে। আবার রাজ্যের মোট বাসিন্দাদের প্রায় ৬০ শতাংশই বসবাস করেন পঞ্চায়েত এলাকায়। রাজ্যের অন্যান্য দফতরের বাজেটের একটা বড় অংশ কর্মীদের বেতন দিতেই চলে যায়। সেখানে এই দফতরের মোট বরাদ্দের প্রায় ৯০ শতাংশ টাকাই উন্নয়নমূলক কাজে খরচ করা হয়।
নবান্নের আধিকারিকদের অভিমত, রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের বাজেট বাড়লে গ্রামবাংলা তার সুফল টের পাবে। লাভবান হবেন গ্রামের মানুষেরাই। এবার বাজেটে পঞ্চায়েত দফতরের অধীন গ্রামাঞ্চলের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। গত কয়েক বছরে গ্রামেও যেভাবে ডেঙ্গু-সহ অন্যান্য মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, তার মোকাবিলায় ভালো পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হতে পারে নয়া বাজেটে। এই খাতে আলাদা করে অতিরিক্ত ২০ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রাথমিক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ২০২৩-২৪ সালে এই খাতে ৩৮৮ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছিল। এবারে তা ৪০০ কোটির বেশি ধরা হয়েছে বলেই খবর মিলেছে। গুরুত্ব পাচ্ছে রাস্তাঘাট নির্মাণ। পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী প্রকল্পে বাজেট অনেকটাই বাড়ানো হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।